'আমায় পারলে ক্ষমা করবেন। আমি দোষী। আপনার সাইকেলটি নিয়ে আমি যাচ্ছি। আমার সন্তান বিকলাঙ্গ, ওর কাছে যেতে হবে আমায়। বরেলি অবধি পৌঁছতে হবে আমায়।' এভাবেই সাইকেল চুরি করে একটি চিঠি লিখে গেলেন এক ব্যক্তি। হিন্দুস্তান টাইমস খবরটি প্রকাশিত করার পরেই সেই চোরের চিঠি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, দায়ী কি সেই ব্যক্তি যে নিরুপায় হয় সাইকেল নেয়, নাকি এই সমাজ যে বাধ্য করে এভাবে সাইকেল চুরি করাতে।
পরিযায়ী শ্রমিকরা লকডাউনের মধ্যে হাজার হাজার কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফিরতে চাইছেন। যাদের কাছে সাইকেল আছে, তারা সেটি করেই যেতে চাইছেন নিজেদের গ্রামে ফেরত। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হলেও তা অপর্যাপ্ত। অনেকের কাছে টিকিটের দাম দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
তেমনই এক হতভাগ্য পরিযায়ী শ্রমিক হলেন বরেলির মহম্মদ ইকবল। তিনি সোমবার রাতে ভারতপুরের রারাহ গ্রাম থেকে একটি সাইকেল চুরি করেন। সাইকেল মালিক সাহেব সিংয়ের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে দেন তিনি। বারান্দা সাফ করতে গিয়ে সেই চিঠিটি পান সাহেব।
চিঠিতে লেখা, 'আমি একজন শ্রমিক, হতভাগ্যও বটে। আমি দোষী আপনার চোখে। আমি আপনার সাইকেল নিয়ে যাচ্ছি, আমায় ক্ষমা করে দেবেন। আমায় বরেলি অবধি যেতে হবে। আমার একটি বিকলাঙ্গ শিশু আছে। তার জন্য আমাকে বাড়ি যেতেই হবে। আমার কাছে আর কোনও বিকল্প নেই'।
রারাহ হল রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের লাগোয়া একটি গ্রাম পঞ্চায়েত, যেখান থেকে অনেক মানুষ নিজেদের গ্রামের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব কার্যত পরিযায়ীদের দায়িত্ব রাজ্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে রাজ্যদের নিশ্চিত করতে হবে যে পরিযায়ীরা যেন রাস্তায় না হাঁটেন। এর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ও বাস চালাতে রাজ্যদের বলেছে কেন্দ্র।