কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে আজ অব্যাহতি দেওয়া হল কিরেণ রিজিজুকে। তাঁর জায়গায় প্রাক্তন আইএএস অফিসার তথা রাজস্থানের সাংসদ অর্জুন মেঘওয়ালকে এই মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিকে আইন মন্ত্রক থেকে সরিয়ে কিরেণ রিজিজুকে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মেঘওয়ালকে আইন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়ার নেপথ্যে আসন্ন রাজস্থান নির্বাচনের কোনও সমীকরণ রয়েছে নাকি রিজিজুকে সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে মোদী সরকার বার্তা দিল, তা এখনই পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। এদিকে এই রদবদলের পরই কিরেণ রিজিজু প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের উদ্দেশে বার্তা দেন।
আজ রদবদলের ঘোষণা হতেই নিজের টুইটার বায়ো এডিট করে নেন রিরুজু। এছাড়া এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজির নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রী হিসাবে কাজ করা আমার কাছে বিশেষ সম্মানের বিষয় ছিল। আমি ভারতের মাননীয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত বিচারপতি, হাই কোর্টগুলির প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতি, নিম্ন বিচার বিভাগ এবং সমগ্র আইনি কর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। দেসে ন্যায়বিচারতে আরও সহজতর করতে সাহয্য করেছেন তানা। দেশের প্রতিটি নাগরিক যাতে ন্যায়বিচার পান, তা নিশ্চিত করেছেন তারা। এই আইনি পরিষেবা প্রদানের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই আমি।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম বনাম সরকারের সংঘাত জারি ছিল। বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বারংবার এই বিরোধ সামনে এসেছে। এমনকী আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু নিজে একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। এই আবহে রিজিজুর বদলি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ধারাবাহিক ভাবে সুপ্রিম কলেজিয়াম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আইনমন্ত্রীর কথায়, ‘কলেজিয়াম ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু ফাঁক ফোঁকড় রয়েছে, তাই মানুষ এখন সরব হচ্ছেন এই বলে যে কলেজিয়াম ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ্ব নয়।’ এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল ও এএস ওকার বেঞ্চ সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নিয়ে প্রশ্ন তোলা বন্ধ হয়নি। সরকারের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে নিয়োগ ও বদলি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। রিজিজুর দাবি ছিল, জনগণের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করার যোগ্য। শুধুমাত্র কলেজিয়ামের পাঠানো প্রস্তাবকে মেনে নেওয়াই সরকারের ভূমিকা হতে পারে না। তিনি এও বলেছেন যে ভারতীয় সংবিধানে এই কলেজিয়াম ব্যবস্থাটা 'অ্যালিয়েন'। তবে আজ যেতে যেতে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে গেলেন অরুণাচলের বিজেপি সাংসদ।