হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তৎকালীন সিডিএস বিপিন রাওয়াত। তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত ও আর ১১জন। তবে এবার ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে যে মানুষের ভুলের কারণেই ওই দুর্ঘটনা হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল লোকসভায়। সেখানে ৩৪টি বিমান দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে একাধিক বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে মানুষের ভুল( হিউম্যান এরর) কে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৬টি দুর্ঘটনা হয়েছিল এই হিউম্যান এররের কারণেই। তার মধ্য়ে অন্যতম হল এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারের দুর্ঘটনা। আর সেই হেলিকপ্টারেই ছিলেন তৎকালীন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
এই দুর্ঘটনার মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে কারিগরী ত্রুটিকে দায়ী করা হয়েছিল। বাইরের কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, হিউম্যান এরর ( সার্ভিসিং) পাখিতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া, এখনও তদন্ত সাপেক্ষ এমন স্ট্যাটাসও রয়েছে এই বিমান দুর্ঘটনার পেছনে।
এদিকে এই দুর্ঘটনার মধ্যে ১০টি হল ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ -২১ বিমান। তারপরেই রয়েছে জাগুয়ার আর কিরণ। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়া সূত্রে।
প্রসঙ্গত ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা হয়েছিল। তামিলনাড়ুর কুন্নুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা হয়েছিল। ওয়েলিংটনে ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন তিনি। সুলুরের ভারতীয় বায়ুসেনার স্টেশন থেকে সেটি ছেড়েছিল ১১.৫০ মিনিটে। ১২.২০ মিনিটে সেটা ভেঙে পড়ে। গন্তব্য থেকে মাত্র ১০ কিমি আগে সেটা ভেঙে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে প্রচন্ড কুয়াশার মধ্যে বিমানটি বেশ কিছুটা নীচে দিয়ে যাচ্ছিল। এরপর পাহাড়ের উপত্যকায় সংঘর্ষ হয়। গাছের মধ্যে ভেঙে পড়ে। এরপর হেলিকপ্টারে আগুন ধরে যায়। ১৪জন আরোহীর মধ্যে ১৩জন মারা যান।একমাত্র গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুন সিং বেঁচে যান।
এদিকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে এক বিবৃতিতে বায়ুসেনা জানিয়েছিল, ' উপত্যকায় অপ্রত্যাশিতভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনে মেঘের মধ্যে কপ্টার ঢুকে যেতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।' বিবৃতিতে বায়ুসেনা জানিয়েছে, পাইলটের বিভ্রান্তিবোধ তথা 'স্প্যাটিয়াল ডিসওরিয়েন্টেশন' এর জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।
বায়ুসেনার তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল সেই সময়, তাতে সিডিএস বিপিন রাওয়াতের কপ্টার দুর্ঘটনার নেপথ্যে, পাইলটের স্থানিক বিভ্রান্তিকে দায়ী করা হয়েছে। সম্ভবত পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল, তখন একেবারে শেষ সময়ে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। বিবৃতিতে বায়ুসেনা জানিয়েছিল, 'তদন্তকারী দল বিশ্লেষণ করেছে বিমানের ডেটা রেকর্ডার আর ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের যাতে দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়।