তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আর সেই শেখ হাসিনাকে কার্যত আতঙ্কে দেশ ছাড়তে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে এবারই প্রথম কোনও রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর নিজের দেশ ছাড়লেন এমনটা নয়। বাংলাদেশের গণভবনের এই যে জনতার ঢুকে পড়া, সেখানে লুঠ চালানো এসব দেখে অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার কথা।
শ্রীলঙ্কা
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষকে একইভাবে দেশ ছাড়তে হয়েছিল। তিনি ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তাঁর জমানায় শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ আর্থিক সংকট দেখা দেয়। এরপরই আমজনতা বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। এরপর ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাজাপক্ষ মলদ্বীপে পালিয়ে যান। পরে তিনি সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। তিনি তাঁর পদও ছেড়ে দিয়েছেন।
আসরফ গনি, আফগানিস্তান
আসরফ গনি ছিলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট। ২০২১ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ক্ষমতায়। এদিকে এরপর সেখানে চলে আসে তালিবান। তার জেরে চাপে পড়ে যান তিনি। কাবুলে প্রবেশ করে তালিবান। আর তিনি আফগানিস্তান ছেড়ে দেন। প্রথমে তাজিকিস্তানে, সেখান থেকে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে চলে যান।
পারভেজ মুশারফ, পাকিস্তান
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্য়মে ক্ষমতায় এসেছিলেন পারভেজ মুশারফ। ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। এরপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি ইস্তফা দেন। এরপর তিনি লন্ডনে চলে যান। সেখান থেকে দুবাই চলে গিয়েছিলেন।
সাদিক অল মাহদি, সুদান
সুদানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সাদিক অল মাহদিও সেনা অভ্যূত্থানের জেরে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। একাধিক দেশে তিনি থাকতেন।
হাইতি
জিয়ান বারট্রান্ড আরিসটাইড হাইতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছিল। তিনি এরপর নির্বাসনে চলে যান।
সুহার্তো, ইন্দোনেশিয়া
১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সুহার্তো ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি। কিন্তু সেই দেশে আচমকা অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। তার জেরে তৈরি হয় অস্থিরতা। এরপর প্রবল চাপে পড়েন সুহার্তো। তারপর তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান।
দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনাও। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এমনই জানিয়েছেন হাসিনার ছেলে সাজিব ওয়াজেদ জয়। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে হাসিনার প্রাক্তন তথ্য ও গণজ্ঞাপন বিষয়ক উপদেষ্টা জানিয়েছেন যে তাঁর মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। কী কারণে তিনি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন জয়। তিনি বলেছেন, ‘যাবতীয় পরিশ্রমের পরেও গুটিকয়েক মানুষ যে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন, সেটায় হতাশ তিনি।’