বাংলাদেশে কলকাতাগামী বাসের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ উঠেছে যে ইচ্ছা করে কলকাতাগামী বাসে ধাক্কা মেরেছে একটি ট্রাক। শুধু তাই নয়, আতঙ্কিত বাসযাত্রীদের ঘিরে ধরে ভারত-বিরোধী স্লোগান তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ত্রিপুরার পরিবহণমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে আপাতত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কোনও মন্তব্য না করা হলেও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ যদি শুধরে যায় তো ভালো, নাহলে ফল ভুগতে হবে।
বাংলাদেশে কলকাতাগামী বাসে ‘ইচ্ছা করে ট্রাকের ধাক্কা'
এমনিতে যে বাসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে, তা ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় আসছিল। ত্রিপুরার পরিবহণ মন্ত্রী বলেছেন, ‘ত্রিপুরা থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়া বিশ্বরোডে আক্রান্ত হয়েছে শ্যামলী পরিবহণের একটি বাস। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গাড়িতে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা। বাসটি বিশ্বরোডের এক পাস ধরেই যাচ্ছিল। হঠাৎ বাসটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুর্ঘটনার কবলে ফেলার জন্য ধাক্কা দেয় পণ্যবাহী একটি ট্রাক।’
ভারতীয়দের ‘মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়’
তিনি আরও বলেন, ‘একই সময় রাস্তায় থাকা একটি অটো-বাসের সামনে চলে আসে এবং শ্যামলী বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। তাঁদের সামনেই ভারত-বিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে এবং কটূ মন্তব্য করে যাত্রীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা।’ সেইসঙ্গে কড়া ভাষায় তিনি বলেন, ‘আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই এবং বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য সেদেশের প্রশাসনকে দ্রুত হস্তক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
‘কোনও মূল্যেই মেনে নেওয়া যাবে না….’
তাঁর থেকেও কড়া সুর শোনা গিয়েছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, 'এরকম ঘটনা যে ঘটবে, সেটা ভাবাই যায়নি। বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটছে, সেটা কোনও মূল্যেই মেনে নেওয়া যাবে না। ওরা যদি নিজেদের শুধরে না নেয়, তাহলে (ফল ভুগতে হবে)। আমি আরও অন্যান্য তথ্য শুনছি। সেগুলি যাচাই করার পরই আমি বলব। কিন্তু ওখানে যা হচ্ছে, সেটা মোটেও ভালো নয়।'
আরও পড়ুন: পদবি ‘শর্মা’, অথচ খাওয়া দাওয়া করতেন ইসলামিয়া হোটেলে, তাতেই সন্দেহ হয় স্থানীয়দের
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'ওখানে (বাংলাদেশে) যে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার চলছে, সেটা পুরো বিশ্ব দেখছে। আমি আশা করছি যে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় নেতারা পুরো বিষয়টির নজরদারি চালাচ্ছেন। সঠিক সময় তাঁরা নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। যেহেতু ত্রিপুরার তিনদিকে বাংলাদেশ আছে, তাই আমরা নজরদারির জন্য বিএসএফ এবং ডিজিপির সঙ্গে কথা বলেছি।'
হামলার অভিযোগ অস্বীকার বাংলাদেশের মিডিয়ায়
যদিও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে কলকাতাগামী বাসে হামলার ঘটনা ঘটেনি। বরং দুর্ঘটনা ঘটেছে। বড় কিছু ঘটেনি বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।