দোল উৎসবের আগেই নাশকতার বিরাট ছক বানচাল করে দিল কলকাতা পুলিশ। ভিনরাজ্যে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে অস্ত্রের যন্ত্রাংশ ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। যৌথ অভিযান চালিয়ে পাকড়াও করা হল চারজনকে। সামনে এল আন্তঃরাজ্যস্তরের বেআইনি অস্ত্র কারবারের এক চক্র!
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর কাছে খবর আসে দোলযাত্রা ও হোলির মরশুমে বড়সড় কোনও নাশকতা চালানো হতে পারে। তার জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরি করে তা মজুত করার প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
এসটিএফ আরও জানতে পারে, পড়শি রাজ্য ওডিশার কটকের একটি বাড়িতেই তৈরি করা হয়েছে সেই অস্ত্রভাণ্ডার! এরপর লালবাজারের তরফ থেকে ওডিশা এসটিএফ এবং কটক জেলার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। লালবাজারের গোয়েন্দা তাদের সবটা জানানোর পর স্থির করা অবিলম্বে অভিযান চালানো হবে।
সেই মোতাবেক, আজ (বৃহস্পতিবার - ১৩ মার্চ, ২০২৫) ভোরে কটকের বড়াধুলেশ্বর গ্রামে পৌঁছে যান দুই রাজ্য়ের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। অভিযান চালানো হয় শরৎচন্দ্র যাদব নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে। তাতেই উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের ভাণ্ডার। পাকড়াও করা হয় চারজনকে।
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযানে তারা বাজেয়াপ্ত করেছে - ২৯টি আগ্নেয়াস্ত্রের অংশ, ৮০টি অসমাপ্ত পিস্তলের যন্ত্রাংশ, ১৪টি স্লাইডার, ৩৬টি পিস্তলের বাঁট, ১৫টি ব্যারেল, একটি লেদ মেশিন, একটি মিল মেশিন, একটি ড্রিল মেশিন, একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন এবং সহজেই ব্যবহার করা যায়, এমন প্রচুর যন্ত্রাংশ!
জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ আজম নামে এক ব্যক্তি রয়েছে। অভিযোগ, তার বাড়িতেই অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হয়েছিল। এবং সেই ব্যক্তি আদতে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার বাসিন্দা!
এছাড়াও, ধৃতদের তালিকায় রয়েছে - শরৎচন্দ্র যাদব, আবিদ হোসেন এবং সমশের আলম। এদের মধ্যে শরৎচন্দ্র যাদবের বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত অস্ত্রের বেআইনি কারবার। সেই কারবার চালাত মহম্মদ আজম নামে কোনও এক ব্যক্তি।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় ধৃত আবিদ ও সমশের আদতে বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি অস্ত্র তৈরির কাজে সিদ্ধহস্ত। সেই কারণেই এই চক্রে যোগ দিয়েছিল তারা।
কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এই অভিযান আদতে একটা বিরাট সাফল্য। ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চারজনের বিরুদ্ধেই অস্ত্র আইনের নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আরও কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িতে রয়েছে, তা জানতে তদন্ত চলছে।