বিভিন্ন বিষয় নিয়েই বেশ কিছুদিন ধরেই টুইটারের সঙ্গে বিবাদে জড়াচ্ছে ভারত সরকার। মূলত সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠছে টুইটারের বিরুদ্ধে। মার্কিন সংস্থার দাবি তারা বাক স্বাধীনতার অধিকার বজায় রাখতে চায় সেই জন্যই সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিক ইত্যাদির অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে চায় না। অন্যদিকে কেন্দ্রের দাবি যে টুইটারের কোনও অধিকার নেই কোন নির্দেশ কতটা তারা মানবে, সেটা ঠিক করার। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার প্রশ্ন হলে আইটি আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিতে পারে বলে কেন্দ্রের বক্তব্য। এর মধ্যেই Koo (কু) বলে একটি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটের ক্রমশই জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রক ও মন্ত্রীরা কু-তে যুক্ত হচ্ছেন। গত বছর এপ্রিল মাসে এই দেশীয় অ্যাপ চালু হয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহে এই পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছে। পীযূষ গোয়েল মঙ্গলবার এই ভারতীয় মাইক্রো ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে যোগ দেন। ইতিমধ্যেই রবিশংকর প্রসাদ, শিবরাজ সিং চৌহান, অনিল কুম্বলে, সাধগুরুর মতো প্রতিথযশা ব্যক্তিরা যুক্ত হয়েছেন এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে।
কু এর প্রতিষ্ঠাতা মায়াঙ্ক বিডওয়াটকা জানিয়েছেন যে গত কিছুদিনে নিশ্চিত ভাবেই অনেকটা বেড়েছে তাদের ইউজারের সংখ্যা। সব মিলিয়ে তিরিশ লাখ মানুষ কু ব্যবহার করছেন। সাতটি ভাষায় এই ওয়েবসাইটে আপনি পোস্ট করতে পারবেন। ভারত সরকার যে আত্মনির্ভর অ্যাপ চ্যালেঞ্জ করেছেন তাতে দ্বিতীয় স্থান পায় কু। প্রথমে কন্নড় ভাষায় শুরু হলেও তারপর হিন্দি সহ অন্যান্য ভাষায় লেখার বিকল্প এসেছে এই অ্যাপে।
মায়াঙ্ক জানানা যে কু-তে আপনি ইংরেজিতে লিখলে ওটা হিন্দিতে অনুবাদ করে দেবে যদি সেটা আপনার পছন্দের ভাষা হয়। ইতিমধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক এই ভারতীয় অ্যাপে এসেছে। অন্যান্য মন্ত্রকদের সঙ্গেও কথা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
টুইটার পক্ষপাতদুষ্ট এই অভিযোগ করে অনেক দক্ষিণপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষ ইতিমধ্যেই কু-তে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তাদের দাবি যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা মাপকাঠি ব্যবহার করে টুইটার। কীভাবে সরকারি নির্দেশ কেবল আংশিক মানতে পারে তারা, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
কু অ্যাপে যে চাইনিজ ইনভেস্টরের অল্প শেয়ার আছে, এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা অপ্রমেয় রাধাকৃষ্ণ জানিয়েছেন যে শুনয়েই শীঘ্রই এই ব্যবসা ছেড়ে দেবে। মোহনদাস পাইয়ের টাকা লাগানো একটি সংস্থা অনেক টাকা ঢেলেছে কু অ্যাপে। আচমকা জনপ্রিয়তা পাওয়ায় কিছু কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হচ্ছে এই দেশীয় অ্যাপ। অনেকে বিভিন্ন ফিচার ঠিক করে চলছে না বলেও নালিশ করছেন। কতটা নিরাপদ এই অ্যাপ, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে কু অ্যাপের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে যে তারা যতটা দ্রুত সম্ভব, সব সমস্যার নিরসন করে ফেলবে। শেষ বিচারে কি হয়, সেদিকেই নজর রাখবে।