অনেক আশা নিয়ে সন্তানদের কোটাতে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠান অভিভাবকরা। কেউ চান ডাক্তার হতে, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু রাজস্থানের সেই কোটাতে এবার উদ্বেগের ছবি। পরিসংখ্য়ান বলছে, গত আট বছরের মধ্য়ে সর্বোচ্চ ২১টি আত্মহত্যার ঘটনা হয়েছে কোটাতে। একেবারে উদ্বেগের ছবি। জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্য়ানে এমন তথ্য় সামনে এসেছে।
তথ্য় অনুসারে জানা গিয়েছে, চলতি মাসে প্রতি চারদিনে গড়ে একজন করে পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে কোটাতে। অর্থাৎ ১৩দিনের মধ্য়ে কোটাতে চারজন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু।
মঙ্গলবার মহাবীর নগর এলাকায় এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃ্ত্যু হয়েছিল কোটাতে। বয়স মাত্র ১৮ বছর। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে সাফল্য পাওয়ার জন্য কোটাতে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু হয়তো প্রত্যাশার চাপ নিতে পারলেন না।
মহাবীর নগর থানার সাব ইনসপেক্টর পরমজিৎ সিং জানিয়েছেন, ওই যুবক বিহারের বাসিন্দা ছিলেন। আইআইটির প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্য পেতে কোটাতে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন তিনি। পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকতেন তিনি। এক বছর আগে এসেছিলেন তিনি। এনিয়ে দ্বিতীয়বার তিনি চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মাঝপথেই সব শেষ হয়ে গেল। পুলিশ জানিয়েছে, বার বার ডেকেও সাড়া মিলছিল না। এরপর দরজা ভেঙে ওই পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়।
তবে পুলিশ ওই ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট পায়নি। তবে ওই ছাত্রের ব্যবহারে যে বিরাট পরিবর্তন এসেছিল তেমনটাও বোঝা যায়নি। পরে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
তবে এই যে মৃত্যুমিছিল রাজস্থানের কোটাতে, একের পর এক স্বপ্ন নিভে যাচ্ছে মাঝপথে এটা যথেষ্ট উদ্বেগের। হয়তো বাবা মায়ের প্রত্যাশার চাপ নিতে পারছে না তারা। শেষ করে দিচ্ছেন নিজেকে।
ক্লাস টেন পাশ করার পরে গোটা দেশ থেকে দলে দলে পড়ুয়ারা কোটাতে চলে আসেন। তারা সেখানে থেকেই পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়। প্রথমে তারা ১২ ক্লাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়। এরপর তারা NEET, JEE পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজেদের তৈরি করা শুরু করে। জায়গা জমি বিক্রি করে, সোনাদানা বেচে সন্তানকে কোটাতে পাঠান অভিভাবকরা। কিন্তু মারাত্মক স্ট্রেসের মধ্যে পড়ে যান অনেকেই। সেই চার সহ্য করতে না পেরেই মাঝপথেই জীবন থেকে বিদায় নেন প্রতিশ্রুতিবান ছাত্রছাত্রীরা।
পরিসংখ্য়ান বলছে, ২০২২ সালে ১৫জন, ২০১৯ সালে ১৮জন, ২০১৮ সালে ২০জন, ২০১৭ সালে সাতজন, ২০১৬ সালে ১৭জন, ২০১৫ সালে ১৮জন আত্মহত্যা করেন কোটাতে। আর ২০২০-২১ সালে এই ধরনের কোনও ঘটনা হয়নি বলে হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে খবর।