উত্তর দেননি কেন্দ্রীয় সরকারের তিন শীর্ষ নেতা। তবে লাদাখ সীমান্ত বিবাদ নিয়ে অভিনব কৌশলে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীকে উত্তর দিলেন লাদাখের সাংসদ জেমিয়াং শেরিং নামগেল। বললেন, ‘‘হ্যাঁ, চিন ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে!’ আর তাতে যে যে এলাকার নাম দিলেন তাতে কার্যত কংগ্রেসই বিপাকে পড়ে গেল।
গত কয়েকদিন ধরেই কখনও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, আবার কখনও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে রাহুল প্রশ্ন করেছেন, চিন কি ভারতের ভূখণ্ড দখল করেছে? কিন্তু সরাসরি জবাব না দেওয়া হওয়ায় মোদী সরকারের উপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছিলেন রাহুল। এই অবস্থায় রাহুলকে পালটা প্যাঁচে ফেললেন লাদাখের বিজেপি সাংসদ।
মঙ্গলবার একটি টুইটবার্তায় তরুণ সাংসদ বলেন, ‘রাহুল গান্ধী : চিন কি ভারতের ভূখণ্ড দখল করেছে? জেমিয়াং শেরিং নামগেল: হ্যাঁ, চিনের দখল করা ভারতীয় ভূখণ্ড নিম্নলিখিত…।’ তারপর একটি বিস্তারিত তালিকা তুলে ধরেন নামগেল। যিনি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের স্বপক্ষে সংসদে ভাষণ দিয়ে রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
তালিকায় নামগেল বলেন, ‘১৯৬২ সালে কংগ্রেসের জমানায় আকসাই চিন (৩৭,২৪৪ বর্গ কিলোমিটার)। ইউপিএ জমানায় ২০০৮ সাল পর্যন্ত চুমুর টিয়া প্যাংনাক এবং চাবজি উপত্যকা (২৫০ কিলোমিটার)। ইউপিএ জমানায় ২০০৮ সালে ডেমজোক এলাকায় জোরাওয়ার দুর্গ ধ্বংস করে দিয়েছিল পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং ২০১২ সালে সেখানে নজরদারি পয়েন্ট তৈরি করেছে এবং সিমেন্টের ১৩ টি বাড়ি নিয়ে চিনা/নতুন ডেমজোক/কলোনি গঠন করেছে। ইউপিএ জমানায় ২০০৮-০৯ সালে ডুঙ্গটি ও জেমজোকের মাঝে প্রাচীন ডুম চেলে (বাণিজ্যকেন্দ্র) হাতছাড়া হয়েছে ভারতের।’ সেইসঙ্গে ডেমজোকের একটি স্যাটেলাইট ছবি তুলে ধরেছেন। সঙ্গে টুইটবার্তায় বলেন, 'আমার আশা, তথ্যনির্ভর আমার উত্তরের সঙ্গে সহমত পোষণ করবেন রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস এবং আমারও ভুলপথে চালিত করার চেষ্টা করবেন।'
বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, এটাই মোদী সরকারের মাস্ট্রারস্ট্রোক। চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের জন্য দলের অন্য প্রান্তের কংগ্রেসকে দুষলে ততটা প্রভাব পড়ত না। তার থেকে যে এলাকা নিয়ে চিনের সঙ্গে উত্তেজনা চলছে, সেখানের সাংসদই উত্তর দিলে স্বাভাবিকভাবেই পালটা প্যাঁচে পড়বে বলে অনুধাবন করে নামগিলকে ময়দানে নামানো হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।