মধ্যরাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তানের লাহোর। তেহরিক-ই-লাবাইক এবং পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায় গতকাল। উল্লেখ্য, শুক্রবারের নমাজের পর গাজা চুক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন দূতাবাসের দিকে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছিল তেহরিক-ই-লাবাইক। তার আগে পাকিস্তানি পুলিশ তেহরিক-ই-লাবাইকের সদর দফতর সিল করে দেওয়ার চেষ্টা করে গতকাল। আর এই নিয়ে সংঘর্ষ বাধে।
উল্লেখ্য, এই তেহরিক-ই-লাবাইক বা টিএলপি হল পাকিস্তানের একটি চরমপন্থী ইসলামি রাজনৈতিক দল। ২০১৫ সালের অগস্টে খাদিম হুসাইন রিজভি এই দলটির প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম দফায় নির্বাচনে নেমেই এই দলটি পাকিস্তান জুড়ে ২০ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছিল। ২০২৪ সালের নির্বাচনে পাকিস্তানে ২৮.৯ লাখ ভোট পেয়েছিল দলটি। এই আবহে জনসমর্থনের নিরিখে পাকিস্তানের পঞ্চম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এটি। এহেন টিএলপি-র অভিযোগ, পাকিস্তানের সরকার আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং গাজার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্প এই গাজা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করে পাকিস্তানের বড় প্রশংসা করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান তাঁর গাজা পরিকল্পনার সঙ্গে রয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং পাক সেনা প্রধান আসিম মুনিরের নাম নিয়ে ট্রাম্প পাকিস্তান বন্দনা করেছিলেন সাংবাদিকদের সামনে। তবে ট্রাম্পের সেই বন্দনার পরেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ট্রাম্পের ঘোষিত গাজা শান্তি পরিকল্পনার সঙ্গে সহমত নয় পাকিস্তান। এককথায়, ট্রাম্পকে গাছে তুলে মই কেড়ে নেয় পাকিস্তান।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি তাঁর গাজা শান্তি চুক্তির প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ট্রাম্পকে সমর্থন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট পর্যন্ত করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। কিন্তু ইউ-টার্ন মেরে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার সেই দেশের সংসদে দাবি করেন, মুসলিম প্রধান দেশগুলি তাঁকে যে খসড়া দিয়েছিল, সেটার সঙ্গে ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার মিল নেই। এই সবের মাঝেই গাজা শান্তি চুক্তিতে সই করতে সম্মত হয়ে গিয়েছে হামাস। আর গাজা নিয়ে পাকিস্তান সরকারের অবস্থানে ক্ষুব্ধ সেই দেশের কট্টরপন্থীরা।