বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপপুঞ্জে বহু দ্বীপে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সেই সব দ্বীপে বসবাসরত আদিবাসিদের কারণেই মূলত এই প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সরকারের তরফে। তবে এতকাল এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না লাক্ষাদ্বীপের। তবে সম্প্রতি জাতীয় সুরক্ষার কথা উল্লেখ করে লাক্ষাদ্বীপের ১৭টি দ্বীপে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল দ্বীপ প্রশাসন। লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, দ্বীপপুঞ্জের যে ১৭টি দ্বীপে কোনও ব্যক্তির বসবাস নেই, সেখানে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারবেন না। এই ধরনের কোনও দ্বীপে প্রবেশ করতে হলে অন্তত পক্ষে জেলা জজের থেকে আগাম অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে।
জানা গিয়েছে, জঙ্গি কার্যকলাপ এবং মাদক পাচার রুখতেই ১৭টি দ্বীপে প্রবেশের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন দ্বীপে অস্থায়ী ঘর রয়েছে। ডাব উৎপাদনকারী অনেকেই সেখানে থাকেন। তবে এই ধরনের এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে পাচারকারীরাও ঘুলে মিশে যায়। অভিযোগ, এই দ্বীপগুলোকে মাদক এবং অস্ত্র পাচারের বৃজন্য ব্যবহার করে থাকত পারে অনেকে। এই আবহে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই ১৭টি দ্বীপে প্রবেশ আধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
প্রসঙ্গত, আরব সাগরের এই দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের অধিকাংশই সংখ্যালধু মুসলিম। ৩৬টি কোরাল দ্বীপের সমষ্টি হল লাক্ষাদ্বীপ। গতবছর লাক্ষাদ্বীপে মদ বিক্রি নিয়ে বতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। লাক্ষাদ্বীপের জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ মুসলিম। এই আবহে সেখানে মদ্যপান নিষিদ্ধ ছিল। তবে গতবছর প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের টানতে মদ বিক্রি নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ঝড় উঠেছিল। পাশাপাশি মিড ডে মিলে নিরামিষ খাবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। এদিকে লাক্ষাদ্বীপের অনেক বাসিন্দাই ভারতের নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। এই সব বিতর্কের মাঝে এবার বিভিন্ন দ্বীপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আইন অমান্য করে নিষিদ্ধ ১৭টি দ্বীপের কোনওটিতে কেউ গেলে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় দণ্ডনীয়। এতে ছয় মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে। সঙ্গে জরিমানাও আরোপিত পারে দোষীর ওপর।