এর আগে আরজি কর কাণ্ডে রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছিলেন, 'দোষীদের আড়াল করা ঠিক নয়'। দেশের বিরোধী দলনেতার এহেন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছিলেন মতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে মমতা এটাই বোঝাতে চাইছেন যে, আরি কর কাণ্ডের পরবর্তী এই আন্দোলন আদতে বিজেপি-সিপিএমের চক্রান্ত। তবে যা পরিস্থিতিতে, ইন্ডিয়া জোটের বাকি সঙ্গীরা এই ইস্যুতে মমতার পাশে দাঁড়াতে পারছেন না। এই আবহে এবার গত ৯ অগস্টের রাতের নৃশংস ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন লালু প্রসাদ যাদব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে লালু বলেন, 'যে প্রতিবাদী ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে আছেন, তাঁদের বিচারের দাবি মেনে নেওয়া উচিত। ট্রেনি চিকিৎসকের সঙ্গে যেটা হয়েছিল, তা অমানসিক।' (আরও পড়ুন: 'জড়িত থাকতে পারে...', মমতার ১০ লাখ খারিজের পর CBI-কে কী বললেন নির্যাতিতার বাবা?)
আরও রড়ুন: 'সেই রাতে সেমিনার হলে সন্দীপ...', আরজি কর কাণ্ডে সামনে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ
আরও পড়ুন: RG কর কাণ্ডে প্রতিবাদের জের? সন্দীপকে 'পুরস্কৃত' করা সরকার বদলি করল ৪৩ চিকিৎসককে
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করার ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। এই আবহে দেশের মোট ৫৫ হাজার হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা থমকে গিয়েছে। যদিও জরুরি পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। এদিকে শুধু সরকারি নয়, আজ বেসরকারি হাসপাতালেও ওপিডি বন্ধ রাখা হয়েছে। ডাক্তাররা নিজেদের চেম্বারেও বসবেন না বলে জানানো হয়েছে। সংগঠনের জাতীয় সভাপতি আর ভি অশোকন এবং সাধারণ সম্পাদক অনিলকুমার জে নায়েকের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাই কোর্ট চিকিৎসক খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু গত বুধবার নিরস্ত্র চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাই আক্রান্তদের প্রতি সহর্মমিতা দেখাতেই কর্মবিরতেতে অংশ নেবেন সদস্যভুক্ত দেশের প্রায় সাড়ে চার লক্ষ চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে সামনে নয়া তথ্য, সেই অভিশপ্ত রাতে যৌনপল্লিতে গিয়েছিল ধৃত সঞ্জয় রায়
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট সকালে হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চারতলায় এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে যে তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। দেহ যখন উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন তাঁর পোশাক অবিন্যস্ত ছিল। যে সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। সেই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণী চিকিৎসকের দুই চোখ দিয়েই রক্তক্ষরণ হয়েছিল। তাঁর মুখেও রক্ত ছিল। এছাড়া যৌনাঙ্গে ক্ষত, মুখে, নখে, পায়ে, পেটে, হাতে, ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্তে নাকি জানা গিয়েছে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে সেই তরুণীকে। এদিকে সেই চিকিৎসকের গলাতেও ক্ষত ছিল বলে জানা যায়। রাত তিনটে থেকে সকাল ছ'টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। কার্পেটের উপর থেকে একাধিক চুল পাওয়া গিয়েছে। নীল রঙের কার্পেটে মেলে ছোপ রক্তের দাগ। এই সবের মাঝে সঞ্জয় রায় বলে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে এই ঘটনা মূল অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। এমনকী 'ভিতরের লোক' জড়িত বলে অভিযোগ উঠছে।