লেবাননজুড়ে পেজার বিস্ফোরণে কমপক্ষে আটজনের মৃত্যু হল। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২,৭৫০ জন। সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় একই সময় লেবাননের বিভিন্ন প্রান্ত এবং সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে পেজার বিস্ফোরণ হয়। মোবাইল ফোনের বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম (যাতে লোকেশন ট্র্যাক করতে না পারে, সেজন্য ব্যবহার করে) হিসেবে যে পেজার ব্যবহার করা হয়, তা সাধারণত হাতে বা পকেটে থাকে। আর তাতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। হিজবুল জঙ্গি সংগঠন এবং সরকারি আধিকারিকদের দাবি, একাধিক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছে এক কিশোরীও। আহত হয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত। সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই বিস্ফোরণের ঘটনায় ইজরায়েলের দিকে আঙুল তুলেছে হিজবুল্লা। সেইসঙ্গে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যে 'উপযুক্ত শাস্তি' দেওয়া হবে ইজরায়েলকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আপাতত ইজরায়েলের তরফে কোন মন্তব্য করা হয়নি।
ঠিক কীভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে?
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাম গোপন রাখার শর্তে এক হিজবুল্লা সদস্য দাবি করেছে যে নয়া ধরনের পেজার ব্যবহার করত জঙ্গিগোষ্ঠী। যেগুলি হাতে ধরে রাখা হয়। মঙ্গলবার আচমকা সেগুলি গরম হয়ে যায়। তারপর বিস্ফোরণ ঘটে। তার জেরে কমপক্ষে দু'জন হিজবুল্লা জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজের পরিচয় গোপন রেখে লেবাননের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১,৫০০ জন হিজবুল জঙ্গি আছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবি এবং ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে লেবানের রাজধানী বেইরুটের (রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় মূলত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে) রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছে অনেকে। কারও হাতে আঘাত লেগেছে। কাউকে-কাউকে আবার প্যান্টের পকেটের কাছে হাত দিয়ে কাতরাচ্ছে দেখা গিয়েছে। হাসপাতালে-হাসপাতালে আহতদের ভিড় উপচে পড়েছে।
প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলে বিস্ফোরণ
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দুপুর ৩ টে ৪৫ মিনিট (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) নাগাদ বিস্ফোরণ হতে শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে বিস্ফোরণ। তবে কীভাবে পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। লেবাননের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে ইচ্ছাকৃতভাবে আগ্রাসী পদক্ষেপ করেছে ইজরায়েল। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর তরফে আপাতত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
হিজবুল্লা ও ইজরায়েলের সংঘাত আরও বাড়বে?
আর সেই ঘটনার পিছনে পুরোপুরি ইজরায়েলের হাত আছে বলে দাবি করেছে হিজবুল্লা। সেই পরিস্থিতিতে যে উত্তাপ ছিল, তা আরও বেড়ে গিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই ইজরায়েলে হামলা শুরু করেছিল হিজবুল্লা। তারপর থেকেই ইজরায়েল এবং হিজবুল্লার মধ্যে নিত্য সংঘাত চলছে। কখনও কখনও এমন হয়েছিল যে পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল।