আবারও উত্তরপ্রদেশ। আবারও চিতাবাঘের হামলার অভিযোগ। স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এবার উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদে চিতাবাঘ বা লেপার্ডের আগমন ঘটেছে। আর নিয়েই ছড়িয়েছে আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে যে অভিযোগ সামনে আসছে, তা হল - চিতাবাঘকে শুধু এলাকায় দেখাই যায়নি, বরং তার হামলায় অনেকে ঘায়েলও হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সেই অনুসারে - চিতাবাঘের হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের তালিকায় দুই পড়ুয়াও রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে, বন বিভাগের তিনজন কর্মীও এই ঘটনায় জখম হয়েছেন বলে খবর সূত্রের। স্থানীয়দের বক্তব্য, একটি চিতাবাঘই এতগুলি হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় থানার পুলিশের দাবি, সোমবার সকালে ৮টা ৩০ মিনিট নাগাদ প্রথম ওই চিতাবাঘটিকে দেখা যায়। বাসিন্দারা জানান, জাসমেই গ্রামের চাষের জমি ও মাঠে চিতাবাঘটিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এদিন সকালে প্রথমে গ্রামবাসীই সেখানে চিতাবাঘের উপস্থিতি বুঝতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এরই মধ্যে জানা যায়, চিতাবাঘের হামলার শিকার হয়েছে দুই স্কুল পড়ুয়া। তারা স্কুলে যাচ্ছিল। সেই সময়েই তাদের উপর ওই চিতাবাঘটি ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে দাবি করা হচ্ছে।
এরপর ওই চিতাবাঘটিই ওই এলাকা ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে যায়। তারপর জানা যায়, পার্শ্ববর্তী মাদনা এলাকায় তাকে দেখা গিয়েছে। সেখানে আরও চারজনের উপর হামলা চালায় প্রাণিটি। ওই চারজন এই আক্রমণে গুরুতর জখম হন। ঘটনাটি ঘটে রাজ সিং ফজুরি নামে এক বাসিন্দার বাড়ির খুব কাছে।
আক্রান্তদের চিৎকার শুনে ছুটে আসে আশপাশে থাকা মানুষজন। তারা চিতাবাঘটিকে ঘিরে ধরলেও সেটি পালিয়ে যায়। এরপর প্রাণিটি নূরপুর নামে একটি এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেখানকার চাষের জমিতে লেপার্ডটিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
ইতিমধ্যেই চিতাবাঘ বেরোনোর খবর বন দফতরের কাছে পৌঁছে যায়। তারা নূরপুরে পৌঁছে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে প্রাণিটিকে ধরার চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। আর সেটা করার সময়েই তিন বনকর্মীর উপর চিতাবাঘটি হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
আক্রান্তদের চিৎকার শুনের গ্রামবাসী সকলে দল বেঁধে ঘটনাস্থলের দিকে দৌড়ন। তাঁরাই আহত বনকর্মীদের উদ্ধার করে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এরপর সেখান থেকে অন্য একটি এলাকায় পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি। সেখানেও গ্রামবাসীর উপর আক্রমণ করে সে।
একের পর এক এমন হামলার খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সেখানে পৌঁছে যান স্থানীয় মহকুমাশাসকও। ততক্ষণে চিতাবাঘের আতঙ্কে গ্রামবাসী জমায়েত করতে শুরু করেছে।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ওই চিতাবাঘটিকে পাকড়াও করা সম্ভব হয়নি। ফলত, স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে রয়েছেন। প্রাণিটিকে ধরতে ফাঁদ পাতা হচ্ছে।