বেশ চলছিল বিয়ের আসর। নবাবের শহর লখনউয়ের এমএম লনে চলছিল সমারোহ। বিয়ের আসরের মাঝেই হঠাৎ পড়ে যায় হুলুস্থুলু। শোনা যায়, বিয়ে যেখানে হচ্ছে, সেই বিল্ডিং-এ দেখা গিয়েছে লেপার্ড! তুমুল চিৎকার, চেঁচামিচি শুরু হয়ে যায়। প্রাণভয়ে অনেকেই দৌড়ে পালান। বর-কনেকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে সেখানেই রেখে দেওয়া হয়। এরপর আসরে নামে বনদফতর।
বিয়ের রাতে কী ঘটেছে?
বিয়ের আসরের মাঝে রুদ্ধশ্বাস ঘটনা। লখনউয়ের পারা এলাকার ওই লন-এ বিয়ের আসরের মাঝে গুটিসুটি মেরে ঘুরছিল লেপার্ড। এদিকে, লেপার্ড দেখে এক অতিথি উপর থেকে ঝাঁপ দিতে গিয়ে আহত হন। খবর পেতেই ঘুম পাড়ানিগুলির বন্দুক নিয়ে ময়দানে নামে বনদফতর। আসে পুলিশ। বিল্ডিং-এ যখনই প্রশাসনের বাহিনী প্রবেশ করে, তখন থেকেই হাড়হিম করা ঘটনা চোখে পড়ে। এক ভিডিয়োয় দেখা যায়, বাহিনী বন্দুক নিয়ে উপরের দিকে সিঁড়ি বেয়ে যেতেই লেপার্ড সিঁড়ির দিকে এসে বন্দুক মুখে করে টেনে সরানোর চেষ্টা করে। তারপর আরও একবার বাহিনীর দিকে এসে হিংস্রো অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। থাবাও বসানোর চেষ্টা করে বলে খবর। তাতে একজন আহতও হয়েছেন। ততক্ষণে বিয়েবাড়িতে তুলকালাম কাণ্ড। বর, কনে ততক্ষণে গাড়িতে। এদিকে, রাত ৯ টায় লেপার্ড দেখার পর থেকে লেপার্ডকে খাঁচা বন্দি করা পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস চেষ্টায় নামে বনদফতর। শেষমেশ গোটা পর্ব শেষ হয় রাত ২.৪৫ মিনিচ নাগাদ। জানা গিয়েছে, প্রায় ৫ ঘণ্টা পর লেপার্ডে বাগে আনা যায়। এদিকে, ততক্ষণ ধরে বর-কনে আটকে ছিলেন গাড়িতে। অন্যদিকে, লেপার্ডকে ঘুম পাড়ানি ওষুধ দিয়ে শেষে খাঁচা বন্দি করা হয়।
লখনউতে কোথা থেকে এল লেপার্ড?
লেপার্ড তো খাঁচা বন্দি হল। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যে শহরের মধ্যে কোথা থেকে এল লেপার্ড? লখনউয়র মতো জনবহুল শহরে, বিয়ের আসরে, যেখানে প্রচুর জনসমাগম হয়েছে, সেখানে লেপার্ড কী করে এল? অবধ রেঞ্জের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার সিতাংশু পাণ্ডে বলছেন,'জেলার বাফার জোনে কোথাও লেপার্ড ছিল, এর খুব জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ শহর বাড়ছে, আর বনাঞ্চলের জায়গা দখল করছে।' তিনি বলছেন, লখনউর কাছে 'বকশি কা তালাব' এলাকায় সামান্য জঙ্গল রয়েছে। সেখানের রাস্তার সঙ্গে যোগ রয়েছে লখিমপুরের। মনে করা হচ্ছে, জঙ্গলের পথে লেপার্ড এসেছে দুধওয়া ন্যাশনাল পার্কের থেকে। বনদফতর বলছে, ‘দিনে ২৫ কিলোমিটার হাঁটা লেপার্ডের কাছে কোনও ব্যাপারই নয়। ডিএনপি থেকে লখনউ ২৩৮ কিলোমিটারের রাস্তা। তবে কোথা থেকে এই লেপার্ড এসেছে তা বের করা কঠিন।’ এদিকে, জানা গিয়েছে, ধৃত লেপার্ডকে পরে বনাঞ্চলে ছাড়া হয়েছে।