প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর কড়া মনোভাব দেখিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকার। ইস্তফা দেওয়ার পরেই ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। এখনও তিনি ভারতেই রয়েছেন। কিন্তু, অন্তর্বতী সরকার চাইছে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিক ভারত। এনিয়ে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা এখন দেশের বাইরে থাকলে থাকুন। সেটা নিয়ে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে এখন বাংলাদেশ সরকারের উচিত দ্রুত দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। পড়শি রাষ্ট্রের এই পরামর্শ বাংলাদেশ মানবে কিনা, এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: ভারতে এসে ফেসবুকে ভারত ভাগের হুমকি, ঘাড় ধরে বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মোদী সরকার
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে থাকেন, যদি শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকেন তাহলে তাঁকে দেশের বাইরে থাকতে দিন। সবাই চায় বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দিকে মনোনিবেশ করুক। আমি মনে করি দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা উচিত।’ বিক্রমাসিংহে মনে করেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হতে পারে। সকলেই চাইছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। জনগণ যাতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। বিক্রমাসিংহে আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে এখন ভারতেই থাকতে হবে। এগুলি রাজনৈতিক বিষয়। আমার মনে হয় বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপরেই এখন প্রাধান্য দেওয়া উচিত।’
উল্লেখ্য, বিক্রমাসিংহে একই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। ২০২২ সালে তৎকালীন দেশের রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাক্ষে গণ আন্দোলনের কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারপরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিক্রমাসিংহে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলন বাংলাদেশ গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দেয়। তার জেরে শেষমেষ ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন শেখ হাসিনা। তারপরেই মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় বাংলাদেশে। নতুন সরকার ইতিমধ্যে দেশের একাধিক প্রাক্তন নেতা মন্ত্রীকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ সহ বেশ কয়েকটি মামলার রুজু হয়েছে। তার পরিবারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ আইনও প্রত্যাহার করেছে অন্তর্বতী সরকার। এখন বাংলাদেশ সরকার চায়ছে হাসিনাকে দেশে নিয়ে গিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে। সেই আবহে বিক্রমাসিংহের মন্তব্য সামনে এল। এখনও বাংলাদেশে ভোট কবে হবে এই নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা। সব মিলিয়ে শক্ত উইকেটে ইউনুস সরকার।