বাংলাদেশে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফাতারি ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বাংলাদেশ। এরই মাঝে এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই ইস্যুতে চিঠি লিখলেন কয়েকজন সাংসদ, হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস এবং আইপিএস অফিসাররা। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট ৬৮ জন এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখেছেন। চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি ছাড়াও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে সেই চিঠিতে। এই আবহে ভারত সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন, বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভারত সরকার যেন পদক্ষেপ করে। এছাড়াও চিন্ময় প্রভু সহ বাকি ধর্মীয় নেতাদের মুক্তির বিষয়টিও যাতে নিশ্চিত করা হয়। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্ধ করে দেওয়া হল ইসকনের অফিস, ভক্তদের নিয়ে গেল সেনা: রিপোর্ট)
এর পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের চাকরি এবং সম্পত্তির অধিকার যাতে খর্ব না হয়, সেদিকটাও দেখার জন্যে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে চিঠিতে। বাংলাদেশি সংখ্যালঘু মহিলারাও যেন বিচার পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যে আবেদন জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ভাবে যাতে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, সেই নিয়ে ভারত সরকারকে পদক্ষেপ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে বিশিষ্টজনদের সেই চিঠিতে। এছাড়া ভারত যাতে কূটনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তারও আবেদন করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই বিষয়টি উত্থাপনেরও আর্জি জানানো হয়েছে।
এর আগেই অবশ্য ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি নিয়ে এক বিবৃতি জারি করেছিল। তাতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও জামিন নাকচ করার বিষয়টি আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি। বিগত দিনে বাংলাদেশের চরমপন্থীরা হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে গিয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্দিরকে অপবিত্র করার একাধিক অভিযোগও উঠেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে যখন এই ঘটনার অপরাধীরা মুক্ত রয়ে গিয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি উপস্থাপনকারী একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা শ্রী দাসের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টিও উদ্বেগের সাথে নোট করছি।'
যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক পালটা বিবৃতি জারি করে। তাতে বলা হয়, 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত এক বিবৃতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরও অত্যন্ত হতাশা ও গভীর দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ করছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির বিষয়টি ভুল ভাবে উত্থাপন করছে কেউ কেউ। ভারতের এই ধনের বিবৃতি সত্যিকে ভুল ভাবে তুলে ধরছে। পাশাপাশি দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী এই বিবৃতি।'