দু'দিনের ভারত বনধে পশ্চিমবঙ্গে তেমন প্রভাব পড়ল না। কয়েকটি জায়গায় বনধ সমর্থনকারীরা রাস্তায় নামেন। অবরোধ করেন। তবে সার্বিকভাবে জনজীবন মোটের উপর স্বাভাবিক থাকল। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অবশ্য বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে। কোথাও বনধের একেবারেই কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। কোথাও আবার রাস্তাঘাট বেশ শুনশান দেখিয়েছে।
‘সরকারি কর্মীরা বনধ সমর্থন করতে পারেন না’
কেন্দ্র সরকার বিরোধী বনধের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেই বনধে সামিল কেরল সরকারের কর্মীরাও। কেরল সরকার নিজে এই বনধকে সমর্থন করছে। এই আবহে কেরল হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, সরকারি কর্মীদের বনধ সমর্থন করা বেআইনি। এবং অবিলম্বে সরকারি কর্মীদের কাজে যোগ দিতে যাতে নির্দেশ দেওয়া হয়, সেই জন্য সরকারকে আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
বিজয়নের সমালোচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
দুই দিনের ভারত বন্ধকে সমর্থন করার জন্য কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং তাঁর সরকারকে নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরালিধীরান।
পথে নামলেন সেলিম, বিমানরা
বনধের সমর্থনে এন্টালিতে মিছিল বের করেছে বাম কর্মী সমর্থকরা। মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা রয়েছেন মিছিলে। এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে মিছিল যাওয়ার কথা ধর্মতলা পর্যন্ত।
কোন্ননগর, শ্রীরামপুরে রেল অবরোধ
হিন্দমোটর জিটি রো ও কোন্নগর স্টেশন সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করল বাম কর্মী সমর্থকরা। শ্রীরামপুর স্টেশনেও রেল অবরোধ করলো বাম কর্মী সমর্থকদের। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে আপ ও ডাউন লাইনের ট্রেন।ফলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। এদিকে হিন্দমোটর বটতলা বাসস্ট্যান্ডে টায়ার জ্বালিয়ে বাম কর্মী সমর্থকরা অবরোধ করে। তার ফলে অবরুদ্ধ হয়ে যায় হিন্দ মোটর জিটি রোড। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পর পুলিশ এসে অবরোধকারীদের তুলে দেয়।
করুণাময়ী মোড়ে রাস্তা অবরোধ
শ্রমিক সংগঠনের ডাকা দু'দিন দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে সল্টলেক ১০ নম্বর ট্যাংক থেকে মিছিল শুরু করে করুণাময়ী মোড়ে এসে রাস্তা অবরোধ করল সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা।
চলন্ত ট্রেন থামাতে গিয়ে ছিটকে পড়ল ধর্মঘটকারী
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে গুরুতর ভাবে আহত এক বনধ সমর্থনকারী। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া জেলার কুলগাছিয়া স্টেশনে। জানা গিয়েছে চলন্ত ট্রেন থামাতে রেল লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছিল সেই বনধ সমর্থনকারী।
দাঁতনে রাস্তায় বসে বাম কর্মীরা
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের সীমানার কাছে বনধের সমর্থনে রাস্তা অবরোধ বাম কর্মীদের।
বনধ চলাকালীন প্রচার আসানসোলের বাম প্রার্থীর
রায়গঞ্জে বনধ সমর্থকদের সঙ্গে বচসা পুলিশের। আসানসোলে বহু জায়গায় পুলিশ ও বনধ সমর্থনকারীদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিকে বনধ চলাকালীনই আসানসোলের বাম প্রার্থী পার্থ মুখোপাধ্যায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
যশোর রোডে পুলিশের সঙ্গে বচসা বনধ সমর্থনকারীদের
লেকটাউনের কালিন্দি ও যশোর রোডে বনধ সমর্থনকারীরা গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে। এর জেরে পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় বনধ সমর্থনকারীদের।
শিয়ালদায় রেল অবরোধ
বনধ সমর্থনকারীরা শিয়ালদা ও যাদবপুরে রেল অবরোধ করেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে হাওড়া স্টেশনে বনধের প্রভাব পড়েনি। যদিও হাওড়া-আমতা শাখায় ডোমজুড় রোড স্টেশনে লোকাল ট্রেন অবরোধ করা হয়। এদিকে ডোমজুড়ে সরকারি বাসও আটকানো হয় রাস্তায়।
পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বনধ সমর্থনকারীদের
কলকাতার যাদবপুরে বনধ পালকারীরা মিছিল বের করেন। লাল ঝান্ডা হাতে যাদবপুরে মিছিল করতে গেলে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বনধ সমর্থনকারীদের। বনধ সমর্থনকারীরা বাম কর্মী সংগঠন সিটুর সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
বাংলায় অফিসে আসতেই হবে সরকারি কর্মীদের
এদিকে কেন্দ্র সরকার বিরোধী এই বনধকে সমর্থন করছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার এবং মঙ্গলবার সরকারি কর্মীদের অফিসে যেতেই হবে।
কোন কোন সংগঠনের ডাকে বনধ
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরামে আছে আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, এইচএমএম, সিটু, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, এআইসিসিটিইউ, এলএফপি এবং ইউটিইউসি-সহ। তাদের ডাকেই আজকের এই বনধ। রাজ্যস্তরেের বিভিন্ন ইউনিয়নকেও সেই ফোরামের তরফে বনধ সমর্থন করার আর্জি জানানো হয়েছে।
বনধের সমর্থন রেল কর্মী সংগঠনগুলির
রেল এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের কর্মী সংগঠনগুলিও ববনধের সমর্থনে সরব হয়েছে। সেক্ষেত্রে রেল পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে।
আর্থিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংগঠন সামিল বনধে
ব্যাঙ্কিং, বিমা-সহ আর্থিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংগঠন সামিল হয়েছে দুই দিনের এই বনধে। কয়লা, লোহা, টেলিকম, তেল, ডাক, আয়কর, তামা ক্ষেত্রের সংগঠনও ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে।
মানুষকে প্রতিবাদে নামার আর্জি
কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সোমবার এবং মঙ্গলবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরাম। কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বিরোধী, কৃষক বিরোধী, মানুষ বিরোধী এবং দেশবিরোধী নীতির’ বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিবাদে নামার আর্জি জানানো হয়েছে ফোরামের তরফে।