লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নীতি পুলিশ কোনও ভাবেই মাথা গলাতে পারবে না। এমনকী তারা যদি বিবাহিত হন আলাদা সঙ্গীদের সঙ্গে, সেই ক্ষেত্রেও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সমাজ তার লাল চোখ দেখাতে পারবে না। এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত দিল হাইকোর্ট। এমতাবস্থায় তাঁরা যদি কোনওরকম বিপদের সম্মুখীন হন, তাহলে তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়াটাও প্রশাসনিক দায়িত্ব ও সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সংশ্লিষ্ট এক মামলার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত কঠোর ও স্পষ্টভাবে এই পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করেছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে, আরও একটি বিষয়ও স্পষ্ট করে দিয়েছে আদালত। লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা এক বা দুই ব্যক্তিই যদি নাবালক বা নাবালিকা হয়, একমাত্র তবেই তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে কিছু বিশেষ নিয়ম কার্যকর থাকবে। এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট নাবালক বা নাবালিকার দায়িত্ব পাবেন তার বা তাদের অভিভাবকরা।
কিন্তু, যদি দেখা যায়, অভিভাবকের কাছে থাকলেও সেই নাবালক বা নাবালিকার জীবন সংশয় রয়েছে, কিংবা অন্য কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তখন আদালত ও প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
এবং এই পরিস্থিতিতে ওই নাবালক বা নাবালিকাকে শিশু সুরক্ষা আইনের আওতায় সরকারি জুভেনাইল হোমে পাঠানো হবে। আক্রান্ত যদি নাবালিকা হয়, তাহলে তাকে মহিলাদের জন্য বরাদ্দ হোমে রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে যত দিন না ওই নাবালক বা নাবালিকা প্রাপ্তবয়স্ক হচ্ছে, ততদিন তাদের এই ব্যবস্থার অধীনেই থাকতে হবে। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি সুরেশ্বর ঠাকুর এবং বিচারপতি সুদীপ্তি শর্মার বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কোনও দম্পতিকে সুরক্ষা দেওয়ার সময় তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক দেখা উচিত কিনা, সেই নিয়েই মামলা উঠেছিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে।
এক্ষেত্রে মূল যে বিষয়টির উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল, তা হল - সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি পরস্পরের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ না হন এবং অন্য কোনও পার্টনারের সঙ্গে বিবাহিত হন,তাহলে আদালতের ভূমিকা ঠিক কী হবে। এই সংক্রান্ত একাধিক মামলার একত্র শুনানিতেই আইনি অবস্থান স্পষ্ট করে প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে উচ্চ আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এরকম মামলারই শুনানি হয়েছিল বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপালের সিঙ্গল বেঞ্চে। বিষয় ছিল, একে-অপরের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ নন, অথচ তাঁরা একত্রবাস করেন, এমন দুই ব্যক্তি তাঁদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা চেয়ে যদি আদালতের দ্বারস্থ হন, তাহলে কী পদক্ষেপ করা হবে? সেই মামলার রায়দান বৃহত্তর বেঞ্চের বিবেচনার উপর ছেড়ে দেন বিচারপতি ক্ষেত্রপাল।