ক্রমশ চাপ বাড়ছিল কেন্দ্রের উপর। সেই চাপের মুখে লকডাউনের জেরে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়াদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন চালানোর অনুমতি দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার রেল মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় ভাল্লা। তারপর পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে শুক্রবার সকাল পাঁচটায় তেলাঙ্গানার লিঙ্গামপল্লী থেকে ঝাড়খণ্ডের হাতিয়াগামী একটি ট্রেন ছাড়ে। ২৪ টি কোচে প্রায় ১,২০০ জন শ্রমিক ছিলেন। তবে আরও বিশেষ ট্রেন চালানো হবে কিনা, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
পরে বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব জানান, আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া, পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য ট্রেন চালানোয় অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। কিছুক্ষণ পরই কেন্দ্রের অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া, পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালাবে রেল।
তবে বিশেষ ট্রেনের জন্য একাধিক শর্ত মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের আর্জিতে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট 'শ্রমিক স্পেশ্যাল' ট্রেন চালানো হচ্ছে। অর্থাৎ যাত্রা শুরুর পর গন্তব্য স্টেশনে গিয়ে থামবে সেই ট্রেন। সুষ্ঠু পরিষেবার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য রেলের তরফে একজন নোডাল অফিসারও নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
একইসঙ্গে ওই ট্রেনের যাত্রীদের একাধিকবার পরীক্ষা করা হবে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, যে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়বে, সেই স্টেশন পর্যন্ত শ্রমিকদের স্যানিটাইজ করা বাসে আনার দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্য়বস্থা অবলম্বন করতে হবে। যাত্রীদের ক্ষেত্রে মুখোশ পরা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। স্টেশনে আসার পর যাত্রীদের এক দফা স্ক্রিনিং হবে। শুধুমাত্র উপসর্গহীন যাত্রীদের ট্রেনে ওঠার অনুমতি দেওয়া হবে। ট্রেনেও সামাজিক দূরত্বের বিধি চলতে হবে। তারপর গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছানোর পর আরও এক দফা স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য। প্রয়োজনে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাঁরা স্ক্রিনিংয়ে উতরে যাবেন, তাঁদের বাড়ি ফেরার জন্য রাজ্যকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের খাবার দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে রাজ্যের উপর। অর্থাৎ যে রাজ্য থেকে ট্রেন ছাড়বে তারা যাত্রীদের খাবার ও জল দেবে। তবে দূরের যাত্রার জন্য যাত্রীদের খাবারের বন্দোবস্ত করবে রেল। পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্য়বস্থার জন্য রেলের তরফে একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এছাড়া, শুক্রবার শ্রমিক স্পেশ্যাল মোট ছ'টি ট্রেন ছাড়ার কথা। একটি লিঙ্গামপল্লী থেকে হাতিয়া পর্যন্ত। বাকিগুলি হল - আলুভা (কেরালা) থেকে ভুবনেশ্বর (ওড়িশা), নাসিক (মহারাষ্ট্র) থেকে লখনউ (উত্তরপ্রদেশ), নাসিক (মহারাষ্ট্র) থেকে ভোপাল (মধ্যপ্রদেশ), জয়পুর (রাজস্থান) থেকে পাটনা (বিহার) এবং কোটা (রাজস্থান) থেকে হাতিয়া (ঝাড়খণ্ড)।