লাল বা রেড জোনভুক্ত জেলাগুলিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সবথেকে বেশি পড়েছে। সেজন্য সেই জেলাগুলিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কড়াকড়ি বজায় রাখা হয়েছে। রেড জোনে কী কী কাজে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কী কী কাজে বি
কোন কোন কাজে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে?
১) যাত্রীবাহী রেল ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। উড়ান পরিষেবাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বন্ধ থাকবে আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা ও যাতাযাত।
তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে ক্ষেত্রে যাতায়াতে ছাড় দিয়েছে, সেই সব ক্ষেত্রেই যাতায়াত করা যাবে।
২) স্কুল, কলেজ, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কোচিং ক্লাস-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৩) হোটেল, রেস্তোরাঁ-সহ হসপিট্যালি পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তবে স্বাস্থ্যকর্মী বা পুলিশ বা সরকারি কর্মী, পর্যটকের জন্য সেই পরিষেবা মিলবে। কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র হিসেবে যেগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলিও লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
৪) সিনেমা হল, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স-সহ বড় জমায়েতের স্থান বন্ধ রাখতে হবে।
৫) সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক-সহ যে কোনও ধরনের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে।
৬) বন্ধ থাকবে ধর্মীয় স্থান।
৭) সাইকেল রিক্সা ও অটোরিক্সা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৮) ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাবও বন্ধ থাকবে।
৯) জেলার বাইরে বা ভিতরে কোথাও বাস চলাচল করবে না।
নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষে কিছু কাজে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। সেগুলি হল -
১) শুধুমাত্র অনুমোদিত কাজের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও গাড়ি চলাচল। চার চাকার গাড়িতে চালক ছাড়া সর্বাধিক দু'জন যাত্রী থাকতে পারবেন। দু'চাকার ক্ষেত্রে একজনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২) শহরাঞ্চলের শিল্প ও কলকারখানা : শুধুমাত্র বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (সিইজেড) ও রফতানিজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্পগুলিকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রিতভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ও টাউনশিপগুলিও সচল থাকতে পারবে। ফার্মাকিউটিক্যালস, মেডিক্যাল ডিভাইস ও সেগুলির কাঁচামাল-সহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তৈরির কারখানা চালু থাকবে। যে কারখানাগুলির সর্বদা প্রক্রিয়া চালু রাখতে হয় ও সেগুলির জোগান নিশ্চিত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির হার্ডওয়্যার উৎপাদন কারখানা চালু রাখা যাবে। পাট শিল্প চালু রাখা যাবে। তবে বিভিন্ন শিফট থাকবে ও সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলতে হবে। প্যাকেজিং সামগ্রীর উৎপাদনেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৩) গ্রামীণ এলাকায় সব কলকারখানার কাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৪) শহরাঞ্চলে নির্মাণকাজ : শুধুমাত্র সিটু নির্মাণ (যেখানে নির্মাণকাজের জায়গাতেই শ্রমিক পাওয়া যায়, বাইরে থেকে আনতে হয় না) এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্পের নির্মাণকাজে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
৫) শহরাঞ্চল অর্থাৎ পুর ও পুরনিগম এলাকায় বাজারের দোকান ও শপিং মল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বাজার ও বাজার কমপ্লেক্সের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান খোলা রাখা যাবে। পাড়া, আবাসনের সব দোকান খোলা রাখা যাবে। অত্যাবশ্যকীয় বা অনাবশ্যকীয় যে পণ্যের ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে শপিং মলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন দোকান খোলা যাবে। অর্থাৎ শপিং মল খোলা যাবে না।
গ্রামীণ এলাকায় সব দোকান খোলা রাখা যাবে। সেই তালিকায় রয়েছে আবাসন এবং বাজারের দোকান। শপিং মল ছাড়া সব দোকান খোলা যাবে।
তবে সবক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান 'দো গজ দূরি' স্লোগান স্মরণ করিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
৬) শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে ই-কমার্স পরিষেবা চালু রাখা যাবে।
৭) প্রয়োজন অনুসারে ৩৩ শতাংশ কর্মী নিয়ে বেসরকারি অফিসে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। বাকি কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করবেন।
৮) সরকারি অফিসে ১০০ শতাংশ ডেপুটি সেক্রেটারি ও তাঁর থেকে উঁচু পদের আধিকারিকরা কাজ করতে পারবেন। প্রয়োজনানুসারে বাকি কর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ অফিসে আসবেন।
তবে কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা ছাড়া প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পুলিশ, কারাগার, হোমগার্ড, সিভিল ডিফেন্স, দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা ও সম্পর্কিত কাজ, এনআইসি, শুল্ক বিভাগ, এফসিআই, এনসিসি, এনওয়াইকে ও পুর পরিষেবা চালু থাকবে। জনগণকে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় কর্মী মোতায়েন করতে হবে।