করোনার জেরে দেশে তিন দফায় লকডাউন হয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে আগামী ১৭ মে অবধি চলবে লকডাউন। কিন্তু ফের কি বাড়তে চলেছে এই মেয়াদকাল? এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথায়।
ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা তোলার ওপর জোর দেন তিনি। ১৫ তারিখের মধ্যে সব রাজ্যকে জানাতে হবে লকডাউন এক্সিট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে তাদের ব্লু-প্রিন্ট। অর্থাত্, কীভাবে লকডাউন থেকে বেরোবে রাজ্যগুলি করোনা সংক্রমণের কথা খেয়াল রেখে, সেটা জানাতে হবে তাদের। কিন্তু সবচেয়ে ইঙ্গিতবাহী হল প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য, যেটি পিএমও প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি বলছেন আমার এটা বিশ্বাস যে প্রথম লকডাউনে যে পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল তা দ্বিতীয়তে লাগেনি, একইভাবে তৃতীয় লকডাউনে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা চতুর্থ দফায় লাগবে না।
সোমবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দেশে করোনার চলনের বিষয় একটা সম্যক ধারণা হয়ে গিয়েছে। জেলাস্তরেও কীভাবে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলা যায়, তা বোঝা যাচ্ছে। কোভিড সংক্রান্ত তথ্য এর বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মোদী বলেন, এখন দুটি কাজ। একটি হল সংক্রমণের হার কমানো। অন্যটি হল ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করা।অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য রাজ্যদের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করা হচ্ছে বলে জানান মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এটা বুঝতে হবে যে করোনা পরবর্তী বিশ্বে জীবনযাপন এক থাকবে না। সেই অনুসারে বদলাতে হবে জীবনশৈলী। তিনি বলেন জন সে লেকার জগ তক- অর্থাত্ মানব থেকে মানবতা অবধি খেয়াল রাখাই হবে নতুন ভাবে বাঁচার শর্ত।
এখনও পর্যন্ত যে কোনও প্রতিষেধক বেরোয়নি করোনার বিরুদ্ধে সেটি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন অর্থনীতি খুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুব প্রয়োজনীয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিজের দু গজ কি দূরি স্লোগানের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। রাজ্যদের কাছে শুক্রবারের মধ্যে পরামর্শও চান তিনি লকডাউন পরবর্তী রণনীতি নিয়ে।
বৃষ্টির সময় করোনা ছাড়াও অন্য অনেক রোগের দেখা দেয়, সেই নিয়ে রাজ্যদের সতর্ক থাকতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। কীভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে নয়া পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়, সেই বিষয়ে অতিরিক্তি আলোচনা করার আর্জি জানান তিনি। ঘরোয়া ট্যুরিজমের সুযোগ করোনা পরবর্তী বিশ্বে বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মোদী। করোনা পরবর্তী যুগে ভারতের কাছে অনেক সুযোগ আসবে যা দেশকে ব্যবহার করতে হবে বলেও জানান তিনি। এরপরেই সম্ভাব্য চতুর্থ লকডাউনের ইঙ্গিত দেন তিনি। তবে রাজ্যগুলি যেখানে অদম্য লড়াই করছে, সেটিকে কুর্নিস জানিয়ে মোদী বলেন তিনি এখনও আত্মবিশ্বাসী।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত ৭০৭৫৬, মৃত ২২৯৩। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২২৪৫৪ জন। পরিযায়ীদের ঘরে ফেরানোর জন্য শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন তো চলছেই। আজ থেকে ১৫টি আপ-ডাউন যাত্রীবাহী ট্রেনও চালু করা হল।