কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এল কেউটে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি, নগদ টাকা, সোনা-রুপোর গয়না, বাংলো, জমি এবং বিলাসবহুল গাড়ির হদিস পেলেন লোকায়ুক্তর আধিকারিকেরা। যা দেখে হতবাকতাঁরা। তবে সবচেয়ে যে বিষয়টি তদন্তকারীদের স্তম্ভিত করেছে, সেটি হল ১৭ টন মধু। কেন এই বিপুল পরিমাণ মধু মজুত করে রেখেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ইঞ্জিনিয়ার, সেটাই জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ত দফতরের (পিডব্লিউডি) অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার জিপি মেহরার বিরুদ্ধে আয়-বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে লোকায়ুক্তের ডিরেক্টর জেনারেল যোগেশ দেশমুখের নেতৃত্বে ভোপাল এবং নর্মদাপুরমে জিপি মেহরার চারটি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান করা হয়। পাশাপাশি মণিপুরম কলোনিতে তাঁর বিলাসবহুল বাড়িতেও তদন্তকারীদের একটি দল যায়। জানা গেছে, তল্লাশি অভিযানে অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের একটি বাড়ি থেকে প্রাথমিক ভাবে নগদ ন’লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। এছাড়াও ৫০ লক্ষ টাকার গয়না, ৫৬ লক্ষ টাকা স্থায়ী আমানতের হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এখানেই শেষ নয়, দানাপানির কাছে মেহরার বিলাসবহুল বাড়ি থেকে ২.৬৪৯ কেজি সোনা এবং ৫.৫২৩ কেজি রুপো উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩০-৪০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে সম্পত্তি সংক্রান্ত নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে, নর্মদাপুরমে বিশাল জায়গা জুড়ে থাকা মেহরার খামারবাড়িতে ৩২টি কটেজ, বিশাল আকারের পুকুর, মন্দির, দুটি গোশালা এবং বিলাসিতার সমস্ত রকম ব্যবস্থা রয়েছে। ওই খামারবাড়ি থেকে বিলাসবহুল গাড়ি, ৬টি ট্র্যাক্টর এবং ১৭ টন মধু পাওয়া গিয়েছে।
ভোপাল লোকায়ুক্তের এসপি ডি রাঠোর বলেন, 'উদ্ধার হওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেপি মেহরার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খবর পাওয়ার পরেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। মধু উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখছি যে তিনি এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিনা।' তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, জেপি মেহরার স্থায়ী আমানত, শেয়ার এবং পলিসি সম্পর্কিত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।জানা গেছে, জেপি মেহরা চলতি বছর পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। পূর্ত দফতরে থাকাকালীন একাধিক চুক্তি এবং নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে লোকায়ুক্ত তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এটি হিমশৈলের চূড়া মাত্র। জেপি মেহরার আরও সম্পত্তির হদিস মিলতে পারে বলে ধারণা তাঁদের।