আনলক-১ ঠিক কীরকম, তার প্রভাব কী - গত ১৫ দিনে সেই ছবিটা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রীদের সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তি করেই রূপরেখা তৈরি করা হবে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনাভাইরাস এবং লকডাউন পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ নিয়ে প্রথম দফায় মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করছেন মোদী। মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আনলক ১-এর পর দু'সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। আমাদের এই সময়ের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে লাভজনক হতে পারে। আজ আমি আপনাদের থেকে বাস্তবের পরিস্থিতি জানতে পারব। আপনাদের পরামর্শ আমাদের ভবিষ্যতের কৌশল নির্ধারণে সাহায্য করবে।’
প্রথম দফার বৈঠকে ২১ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছিল। সেগুলি হল - পঞ্জাব, অসম, কেরালা, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশ, চণ্ডীগড়, গোয়া, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, লাদাখ, পুদুচেরি, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, সিকিম, লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ।
প্রধানমন্ত্রী কী কী বললেন -
১) আগামীদিনে যে যে রাজ্যগুলিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে, তারা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে, তার ফলে অন্য রাজ্যগুলিও লাভবান হবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চেষ্টার ফলে আমাদের অর্থব্যবস্থায় বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
২) বিদ্যুতের ব্যবহার আগে কমেই যাচ্ছিল। এখন তার বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। গত বছর মে’র তুলনায় চলতি বছর দ্বিগুণ সার বিক্রি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় খারিফ (শস্যের) রোপণও ১২-১৩ শতাংশ বেশি হয়েছে। লকডাউনের আগে যত দু'চাকা গাড়ি উৎপাদন হত, এখন তার প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি হচ্ছে। খুচরো বাজারে ডিজিটাল পেমেন্টও লকডাউনের আগের মতো পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। শুধুু তাই নয়, মে'তে টোল সংগ্রহ বেড়েছে। যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষণ।
৩) করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে যখন ভবিষ্যতে আলোচনা হবে, তখন তা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা মনে করিয়ে তুলবে।
৪) গত কয়েক সপ্তাহে হাজার হাজার ভারতীয় বিদেশ থেকে ফিরেছেন, লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের ভিটেয় পৌঁছে গিয়েছেন। পরিবহনের প্রায় সব মাধ্যমই সচল হয়ে গিয়েছে। তাও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে করোনাভাইরাসের প্রভাব ততটাও বেশি নয়। বিশেষত ভারতের জনসংখ্যা বেশি হলেও।
৫) ভারতে সুস্থ হয়ে ওঠার রোগীর হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আমাদের কাছে একজন ভারতীয়ের মৃত্যুও বেদনাদায়ক। কিন্তু এটাও সত্যি যে বিশ্বের সেইসব দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম যেখানে করোনায় সবথেকে কম মৃত্যু হয়েছে।
৬) আমরা যত করোনা রুখতে পারব, তত তার বিস্তার কমবে, আরও অর্থনীতি খুলবে, আমাদের অফিস খুলবে, পরিবহনের বিভিন্ন মাধ্যম চলবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
৭) সব নিয়ম ঠিকভাবে মেনে চললে করোনাভাইরাসের জেরে যে ক্ষতি হয়, তা কমানো যাবে
৮) এই মুহূর্তে মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোনোর বিষয়ে চিন্তা করাও ঠিক নয়। 'দো গজ কি দূরি', হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। বাজার খোলা এবং মানুষ বাইরে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে এই সতর্কতাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।