ওপারে মায়ানমার। আর মায়ানমারে যে বিস্ফোরণ হচ্ছে, তার শব্দে কেঁপে উঠছে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকা। তার জেরে ঘুম উড়ে গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এমনকী বিস্ফোরণের তীব্রতায় সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার বাড়ি কেঁপে উঠেছে। কেঁপে উঠেছে মাটিও। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সীমান্তবর্তী লাগোয়া এলাকায় বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। আর যেহেতু নদীর এপারেই বাংলাদেশ, তাই টেকনাফ-সহ কয়েকটি এলাকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
প্রায় টানা ৮ ঘণ্টা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার ভোর চারটে নাগাদ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। তারপর থেকে লাগাতার বিস্ফোরণের শব্দ কানে আসতে থাকে। সেই ধারা অব্যাহত থাকেন সকাল ১১ টা পর্যন্ত। তবে শনিবার যে প্রথমবার এরকম ঘটনা ঘটেছে, তা মোটেও নয়। শুক্রবারও রাতের দিকে এরকম বোমাবর্ষণের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। এমনকী সীমান্তের ওপারের আকাশে বিমানকে চক্কর দিতে দেখেছেন বাংলাদেশের মানুষরা।
সবমিলিয়ে মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, সীমান্তবর্তী এপারে বাংলাদেশের এক বাসিন্দা দাবি করেছেন যে মাঝেমধ্যেই প্রকট বিস্ফোরণের শব্দে বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন অনেকে। পরিস্থিতি এমনই হয়ে উঠেছে যে আতঙ্কে অনেকেই নিজেদের ঘরে থাকতে পারছেন না। শীতের রাতে বাইরে রাত কাটাতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ওই বাংলাদেশি।
সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন টেকনাফ উপজেলার শীর্ষ আধিকারিক শেখ আহসানউদ্দিন। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, টেকনাফ উপজেলার কর্তা জানিয়েছেন যে আচমকা বিকট শব্দ শোনা যেতে থাকে। কেঁপে ওঠে বাড়ি। কেঁপে ওঠে মাটি। পরবর্তীতে ধাতস্থ হয়ে জানতে পারেন যে বিদ্রোহী বাহিনীর উপরে হামলা চালাচ্ছে মায়ানমারের সরকারি বাহিনী। আকাশপথে চলছে হামলা। আর সেটা টের পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকেও।
তবে মাথাব্যথার কারণ শুরু সেটাই নয়। মায়ানমারে বিস্ফোরণের জেরে যাতে কেউ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারেন, সেজন্য নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলার শীর্ষ আধিকারিক। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেকনাফ উপজেলার শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীকে নজরদারি আরও জোরদার করতে বলা হয়েছে, যাতে কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত পার করতে না পারেন।