বিশ্বের অন্যতম আশ্চর্য নিদর্শন হিসাবে মাচু পিচুর নাম বারবার উঠে এসেছে। প্রত্নতত্ত্বের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকার নানান মানবসৃষ্ট নিদর্শন অবাক করেছে সকলকে। তবে জানেন কি এই 'মাচু পিচু' নামটি সম্পর্কে কোন বিস্ফোরক তথ্য উঠে অসেছে নয়া গবেষণায়? ইনকা সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন মাচু পিচুর নাম গত ১০০ বছর ধরে ভুল বলা হচ্ছে! শুনে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি! বলছে, দোন্তো আমাদো গোনজোলস ও ব্রায়ান এস বাউয়ারের নয়া গবেষণা। 'জার্নাল অফ ইনস্টিটিউট অফ আন্দিয়াব স্টাডিজ' এ প্রকাশিত তাঁদের নয়া গবেষণা অবাক করছে অনেককে।
নয়া গবেষণার দাবি, ইনকা সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র পেরুর আন্দিয়ান জঙঅগলের 'মাচু পিচু' আসলে 'হুয়ায়না পিচু'। ইনকা সভ্যতার মানুষ 'হুয়ায়না পিচু' বলেই এই শহরকে সম্বোধন করতেন, দাবি গবেষণার। ফলে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই নাম ভুল উচ্চারণ হচ্ছে বলে দাবি করছেন গবেষক আমাদো গোনজোলস ও ব্রায়ান এস বাউয়াররা। সিডার সিটিতে সাউদার্ন উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্থ্রপোলজির অধ্যাপক এমিলি ডিন বলছেন, 'হুয়ায়না' বলতে বোঝায় নতুন বা যুব। আর 'পিচু' শব্দের অর্থ হল, শৃঙ্গ। তিনি বলছেন, এই গবেষণা অনুযায়ী এতদিন ধরে তাহলে ওই এলাকাকে 'পুরনো শৃঙ্গ'এর এলাকা বলে সম্বোধন করা হত, যেখানে মূলত সেটা নতুন শৃঙ্গের এলাকা বলে পরিচিত হওয়ার কথা গবেষণা অনুযায়ী।
গত অগাস্ট মাসে এই গবেষণার বেশ কিছু ভুল ত্রুটি শুধরে তা প্রকাশ্যে আসে। সেখানে বলা হচ্ছে এই নগর তৈরি হয়েছিল ১৪২০ সালে। এরপর স্প্যানিয়ার্ডসরা ইনকাদের ওপর আক্রমণ করলে সব ধ্বংস হয়। এরপর ১৯১১ সালে মার্কিনি ভূপর্যটক হিরাম বিংহ্যাম এই এলাকা আবিষ্কার করেন। উল্লেখ্য, মাচু পিচুর নাম নির্ধারণে, তিনটি মূল উৎসের উপর ভর করেছেন গবেষকরা। একটি হল বিংহ্যামের ফিল্ড রিপোর্ট, এলাকার পর্যটকদের তথ্য, ঔপনিবেশিক যুগের নানান তথ্য। দুই গবেষক মূলত নিজের নিজের গবেষণা প্রথমে এই এলাকাকে ঘিরে তুলে ধরেন। পরে বিংহ্যামের আগের মানচিত্র ও প্রাপ্ত নথি পর্যালোচনা করেন। আর তাতেই উঠে আসে চমকপ্রদ তথ্য। এই নাম , 'হুয়ায়না পিচু' প্রথমে ১৫৮৮ সালে নথিভূক্ত হয়,যখন এখানে ফের ফিরে আসার কথা ভাবেন বহু বাসিন্দা। তবে গবেষকরা চাইছেন না, এই এলাকার নাম বদল হোক এখন, যেখানে ১০০ বছর ধরে গোটা বিশ্ব এই এলাকাকে মাচু পিচু বলে জানে, সেখানে এই নাম বদলের প্রস্তাব তাঁরা দিচ্ছেন না।