হাসপাতালের বকেয়া টাকা মেটাতে না পারায় অশীতিপর বৃদ্ধকে খাটে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেয ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ভোপাল থেকে ২১১ কিমি দূরে শাজাপুর জেলার এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ রোগীর সহ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ ওঠায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ও বৃদ্ধের ছবি প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ছবিতে এক বৃদ্ধকে হাসপাতালের খাটের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁর নাম লক্ষ্মীনারায়ণ। তিনি শাজাপুরের রাজগড় জেলার রানায়ডা গ্রামের বাসিন্দা। গত ১ জুন পেটে অসহ্য ব্যথা নিয়ে তাঁকে ‘সিটি হাসপাতাল’ নামে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শুক্রবার হাসপাতাল থেকে তাঁর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। তার আগে হাসপাতালের মোট ১১,২৭০ টাকার বিল মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল।
রোগীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিল মিটিয়ে দেওয়ার পরেও লক্ষ্মীনারায়ণকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়নি। উলটে আরও টাকা দাবি করে তাঁকে শয্যার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাসপাতাল ছেড়ে যেতে দেওয়া হয়নি তাঁর মেয়েকেও।
বকেয়া বিল নিয়ে রোগীর আত্মী-স্বজনদের সঙ্গে কাজিয়া চরম পর্যায়ে পৌঁছলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিসে কবর দেন। কিন্তু তার আগেই হাত-পা বাঁধা বৃদ্ধ লক্ষ্মীনারায়ণের ছবি কেউ তুলে ফেলেন।
বৃদ্ধের দাবি, ভরতির সময়েই হাসপাতালে ১১,০০০ টাকা জনমা দেন তাঁর পরিবার। তাঁর মেয়ে বলেন, তাঁদের কাছে এর বেশি অর্থ ছিল না। তাঁদের দাবি, মাত্র ২৭০ টাকা না পেয়ে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়তে রাজি হয়নি কর্তৃপক্ষ।
সিটি হাসপাতালের এ হেন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান শনিবার রাতে টুইট করেন, ‘একজন বরিষ্ঠ নাগরিকের প্রতি শাজাপুরের এক হাসপাতালে প্রচণ্ড নিষ্ঠুর ব্যবহার নজরে এসেছে। দোষীদের রেহাই দেওয়া হবে না এবং তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’ তার পরেই সিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়।
তাঁদের বিরুদ্ধে করা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রবিবার হাসপাতালের ডিরেক্টর বরুণ বাজাজ জানান, রোগীকে শয্যায় বেঁধে রাখার সঙ্গে হাসপাতালের বিল মেটানোর সম্পর্ক নেই। যে হেতু তীব্র পেটের যন্ত্রণার কারণে তিনি ওষুধ খেতে পারছিলেন না, সেই কারণে হাসপাতাল কর্মীরা ওই রোগীর পা বেঁধে হাত চেপে ধরে তাঁকে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি জানিয়েছেন, রোগীর ঈত্মীয়রা বিল মেটাতে অস্বীকার করলে পুলিশে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে টাকা না পেলেও পরে লক্ষ্মীনারায়ণকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।