কোভ্যাক্সিন টিকার ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করার প্রায় দশ দিন পরে মারা গেলেন মধ্য প্রদেশের ভোপালের এক বছর বিয়াল্লিশের স্বেচ্ছাসেবক। শনিবার এই খবর প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি পিপলস মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের উপাচার্য রাজেশ কাপুর। তবে সরকারি আধিকারিকদের সন্দেহ, বিষক্রিয়ায় ওই স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃত স্বেচ্ছাসেবকের ভিসেরা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধ্য প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রভু রাম চৌধুরী। ঘটনাটি ভ্যাক্সিন সম্পর্কিত বলে অত্যন্ত স্পর্শকাতর, মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি বলেন, ‘ভ্যাক্সিনের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিষেধক সম্পর্কে কোনও ভুল ধারণা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলে তা ২৪ ঘণ্টা বা ২-৩ দিনেই বোঝা যেত, কয়েক দিন পরে নয়।’
উপাচার্য রাজেশ কাপুর জানিয়েছেন, গত ১২ ডিসেম্বর পিপলস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত কোভ্যাক্সিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করেছিলেন দীপক মাউয়ি নামে ওই স্বেচ্ছাসেবক।
মধ্য প্রদেশ মেডিকো লিগাল ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা অশোক শর্মার মতে, ময়না তদন্তে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিষক্রিয়াই সন্দেহ করছেন চিকিৎসকরা। গত ২১ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যুর পরে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ও টিকা উৎপাদক সংস্থা ভারত বায়োটেক-কে খবর দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করার আগে মাউয়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। টিকা দেওয়ার পরে তাঁকে ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর ৭-৮ দিন তাঁর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে, জনজাতিভুক্ত পরিবারের সদস্য মাউয়ির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি পেশায় দিনমজুর ছিলেন। ট্রায়ালে তাঁকে ও তাঁর সহকর্মীকে টিকা দেওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।
পরিবারের অভিযোগ, টিকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পরে মাউয়ির শরীরে অস্বস্তি দেখা দেয়। ১৭ ডিসেম্বর তিনি কাঁধে ব্যথা অনুভব করেন। দুই দিন পরে তাঁর মুখ থেকে গাঁজলা বের হতে শুরু করে। তবে তিনি কোনও চিকিৎসক দেখাতে রাজি হননি। ২১ ডিসেম্বর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান এই শ্রমিক।