তামিলনাড়ুতে যাঁরা 'সিদ্ধ' মতে চিকিৎসা করেন, তাঁরা চাইলে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বা অ্যালোপ্যাথি অনুসারে নিজেদের অনুশীলন করতেই পারেন। কিন্তু, তাঁরা কখনই অ্যালোপ্যাথি ওষুধ মজুত করতে পারবেন না। একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
আদালতের বক্তব্য হল, একজন সিদ্ধ চিকিৎসক যদি অ্য়ালোপ্যাথি ওষুধ মজুত করে রাখেন, তাহলে তা ড্রাগ্স অ্য়ান্ড কসমেটিক্স অ্যাক্ট লঙ্ঘন হিসাবে গণ্য করা হবে।
সংশ্লিষ্ট মামলা চলাকালীন বিচারপতি জি জয়চন্দ্রণ বলেন, '২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ একটি সাধারণ নির্দেশিকা জারি করে। সেই নির্দেশিকায় তামিলনাড়ু সিদ্ধ মেডিক্যাল কাউন্সিলের নথিভুক্ত সিদ্ধ চিকিৎসকদের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুসারে অনুশীলন করার অনুমতি দেওয়া হয়।'
তাই এক্ষেত্রে একজন সিদ্ধ চিকিৎসককে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুসারে অনুশীলন করতে বাধা দেওয়া যাবে না।
যে মামলা প্রসঙ্গে আদালত এই রায় দিয়েছে, সেই মামলাটি করেছিলেন এস সিন্ধু নামে এক সিদ্ধ চিকিৎসক। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে একটি মামলা চলছে। যে মামলায় ওই মহিলার বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে অ্য়ালোপ্যাথি ওষুধ মজুত রাখার অভিযোগ করেছেন একজন ড্রাগ ইন্সপেক্টর।
এস সিন্ধু তাঁর বিরুদ্ধে চলা ওই মামলাটি খারিজের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু, হাইকোর্ট তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালতের বক্তব্য, সরকারি নিয়ম অনুসারে সিন্ধু অবশ্যই অ্যালোপ্যাথ প্র্যাকটিস করতে পারেন। কিন্তু, তিনি তাঁর চেন্নাইয়ের ক্লিনিকে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ মজুত করে রাখতে পারেন না।
এক্ষেত্রে মূল ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সিন্ধু তাঁর ক্লিনিকে ২৯টি অ্যালোপ্যাথি সামগ্রী মজুত করে রেখেছিলেন। যা বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা তৈরি করেছে।
সিন্ধুর সেই সম্ভারের মধ্যে ডাক্তারদের জন্য বরাদ্দ 'সিল' করা নমুনা, এমআরপি-সহ ১৫টি ওষুধ এবং তিনটি ব্যবহার করা ওষুধ ছিল। যা অভিযান চলাকালীন বাজেয়াপ্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, আয়ুর্বেদের মতোই সিদ্ধ হল ভারতের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী চিকিৎসা পদ্ধতি। যা মূলত দক্ষিণ ভারতেই প্রচলিত রয়েছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে একইসঙ্গে রোগীর মন, শরীর ও আত্মার চিকিৎসা করা হয়।
তামিলনাড়ু বোর্ড অফ ইন্ডিয়ান মেডিসিনের অধীনে, এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে যাঁরা চিকিৎসা করেন, সেই চিকিৎসকদের নাম নথিভুক্ত করা যায়। এছাড়া, ভারত সরকারের নির্দেশ অনুসারে, ১৯৯৭ সালে তামিলনাড়ু সরকার 'তামিলনাড়ু সিদ্ধ মেডিসিন নিয়মাবলী আইন' প্রণয়ন করে।