হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আরও এক ধর্মীয় সভায় ধর্মগুরুর মন্তব্য ঘিরে সরগরম হতে শুরু করেছে রাজনৈতিক আঙিনা। ছত্তিশগড়ে আয়োজিত ধর্মীয় সভায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজের মন্তব্য নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে। মহাত্মা গান্ধীর হত্যা ইস্যুতে নাথুরাম গডসের স্তূতি উঠে আসে তাঁর মন্তব্যে। আর এই মন্তব্যের জেরেই স্বঘোষিত ধর্মগুরু কালীপুত্র কালীচরণ মহারাজ বিতর্কের জালে রয়েছেন। রবিবার ছত্তিশগড়ে এক ধর্মীয় সভায় কালীপুত্র কালীচরণ মহারাজ মহাত্মা গান্ধীর নামে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যে মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন মহান্ত রাম সুন্দর দাস, যিনি নিজেকে ধর্ম সংসদ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। উল্লেখ্য, কালীচরণ মহারাজ মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। আর সেই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব মন্ত্রিসভার সদস্য নবাব মালিক এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের অকোলার বাসিন্দা কালীপুত্র কালীচরণ মহারাজ। মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী নবাব মালিক এই ধর্মগুরুকে 'ফর্জিবাবা'(ভুয়ো ধর্মগুরু) আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার দাবি জানান। নবাব মালিকের দাবিকে সমর্থন জানান মহারাষ্ট্রের বহু বিধায়ক। নবাব মালিক বলেন, 'তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রেহিতার মামলা দায়ের হোক আর ওঁকে গ্রেফতার করা হোক। এর মাধ্যমে আমরা দেশ ও বিশ্বের কাছে বার্তা দিতে পারব যে, যারা মহাত্মাকে অপমান করবে তাদের সহ্য করবে না ১০০ কোটি দেশবাসী।' উল্লেখ্য, ছত্তিশগড়ে ইতিমধ্যেই ওই ধর্মীয় সভায় আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে কালীচরণ মহারাজের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। সেখানে রায়পুরের প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেতা প্রমোদ দুবে অভিযোগ দায়ের করেন এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে।
এদিকে মহারাষ্ট্র বিজেপির নেতা সুধীর মুঙ্গান্তিওয়ার কালীচরণ মহারাজের মন্তব্যের কড়া নিন্দা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে, নবাব মালিক নিজে যখন রাজ্যের মন্ত্রী, তখন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন উদ্ধব সরকার এখনও গ্রেফতার করছে না এই ধর্মদগুরুকে? এদিকে, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার জানিয়েছেন , এই ঘটনা সম্পর্কে উপযুক্ত তথ্য নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী কোনও তথ্য প্রমাণ পেলেই নির্দিষ্ট পথে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, যে কালীচরণ মহারাজকে ঘিরে বিতর্ক ঘুরপাক খাচ্ছে, তিনি আগে অভিজিৎ ধনঞ্জয় সারাং নামে পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলাতেই স্কুল ছুট অভিজিৎ ধর্মীয় কর্ম প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হন। জানা যায় তাঁর বাবা মহারাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রকে কর্মরত ছিলেন আর ভাইয়ের একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। এদিকে, অভিজিতের ধীরে ধীরে কালীচরণ হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর ধর্মাসক্তি। ইন্দোরের এক ধর্মগুরুর সান্নিধ্যে এসে তিনি নিজেকে ধর্মের পথে ঠেলে দেন বলে খবর।