হাতে রুদ্রাক্ষের মালা, গায়ে গেরুয়া পোশাক- মহাকুম্ভে এসে সেভাবেই ত্রিবেণী সংগমে পুণ্যস্নান সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার সকালে মহাকুম্ভে পৌঁছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে বোটে করে সংগমে যান। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই সেখানেই পুণ্যস্নান সারেন প্রধানমন্ত্রী। রুদ্রাক্ষের মালা ধরে তাঁকে মন্ত্রোচ্চারণ করতে দেখা যায়। সংগমে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে প্রার্থনা করেন। চোখ বুজে প্রণাম করেন ভগবানকে। সূত্রের খবর, পুণ্যস্নানের পরে বিশেষ পুজোও করবেন প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু আজ কেন পুণ্যস্নান করলেন মোদী? মাহাত্ম্য কী?
এমনিতে মকর সংক্রান্তি, মৌনী অমাবস্যা এবং বসন্ত পঞ্চমীতে ‘অমৃত স্নান’ সারেন অসংখ্য মানুষ। সামনে আসছে মাঘী পূর্ণিমার ‘অমৃত স্নান’-ও। সেই ?দিনটাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু তার পরিবর্তে বুধবার যে প্রধানমন্ত্রী ত্রিবেণী সংগমে (গঙ্গা, যমুনা ও পৌরাণিক সরস্বতীর মিলনস্থল) পুণ্যস্নান সারলেন, সেটার নেপথ্যে বিশেষ মাহাত্ম্য আছে বলে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, আজ মাঘী অষ্টমী তিথি পড়েছে। মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী, আজকের দিনেই প্রাণত্যাগ করেছিলেন ভীষ্ম। সেজন্যই পুণ্যস্নানের জন্য আজকের দিনটা বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
যদিও নেহাতই সেই পৌরাণিক গুরুত্বের কারণে যে প্রধানমন্ত্রী আজকের দিনটা বেছে নিয়েছেন, তা মানতে নারাজ আম আদমি পার্টি (আপ)। দিল্লির শাসক দলের বক্তব্য, রাজধানীতে যখন বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ-পর্ব চলছে, তখন প্রধানমন্ত্রী যে ত্রিবেণী সংগমে পুণ্যস্নান সারছেন, তা থেকে এটা স্পষ্ট যে একেবারে পরিকল্পনা করেই আজকের দিনটা বেছে নেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে আপ।
মহাকুম্ভ মেলায় ইতিমধ্যে ৩৮ কোটি মানুষ এসেছেন!
এমনিতে এবার কুম্ভমেলার বিশেষ গুরুত্ব আছে। কারণ ১২ বছর পরে মহাকুম্ভ হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যে মহাকুম্ভে দেশ ও বিদেশ থেকে ৩৮ কোটি মানুষ এসেছেন। সেরেছেন পুণ্যস্নান। শেষপর্যন্ত পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৪০ কোটি পেরিয়ে যাবে বলে দাবি করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে তোপ বিরোধীদের
যদিও তারইমধ্যে মৌনী অমাবস্যার ‘অমৃত স্নান’-র আগে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। তার জেরে কমপক্ষে ৩০ জনের মৃৃত্যু হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, যোগী সরকারের অপদার্থতার কারণে সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ পুণ্যার্থীদের সুরক্ষার উপরে জোর না দিয়ে শুধুমাত্র ভিআইপিদের নিরাপত্তার উপরে মনোনিবেশ করেছে। আর তার জেরেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে বিরোধীরা।