মহাকুম্ভ মেলায় মৌনি অমাবস্যায় পূণ্যস্নানের হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জন পূণ্যার্থীর। এর জেরে বিভিন্ন মহল থেকে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে এই ঘটনা নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আগামী একমাসের মধ্যে এই নিয়ে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশও দিয়েছেন যোগী। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছেন। দাবি করা হচ্ছে, বোমা আছে বলে গুজব ছড়ানো হয়ে থাকতে পারে সেখানে। এর জেরেই এই হুড়োহুড়ি দেখা দিয়েছিল। এই আবহে সরাসরি ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ না করলেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বুধবার যোগী বলেছিলেন, 'গুজবে কান দেবেন না'। (আরও পড়ুন: 'দেহের অবস্থা ভালো না', মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু কলকাতার বৃদ্ধারও)
এদিকে মৃতদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। আবেগপ্রবণ হয়ে এই ঘটনা নিয়ে যোগী আদিত্যনাথকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'এই ঘটনা শুধুমাত্র হৃদয়বিদারক নয়, এটা আমাদের জন্যে একটা শিক্ষাও বটে।' এদিকে তদন্ত প্রসঙ্গে যোগী বলেন, 'বিচার বিভাগীয় কমিশনকে হুড়োহুড়ি এবং পূণ্যার্থীদের পদপিষ্ট হওয়ার কারণ বের করতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এমন সুপারিশ করতে বলা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।' অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হর্ষ কুমারের নেতৃত্বে এই বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্যানেলে আরও আছেন প্রাক্তন ডিজিপি ভিকে গুপ্ত এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার ডিকে সিং। এদিকে যোগী আরও ঘোষণা করেন, এভাবে পূণ্যার্থীদের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার কারণ কী তা জানতে পুলিশ তদন্তও করা হবে।
এদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, মুখ্যসচিব মনোজ কুমার সিং এবং ডিজিপি প্রশান্ত কুমার আগামী স্নানের দিনগুলির জন্য ভিড় ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজ যাবেন। উল্লেখ্য, প্রয়াগরাজে যে পূণ্যার্থীদের মৃত্যু ঘটেছে, তা জানা যাচ্ছিল বুধবার সকাল থেকেই। তবে সরকার এই নিয়ে কোনও পরিসংখ্যান দেয়নি প্রাথমিক ভাবে। মুখ্যমন্ত্রী শুধু জানিয়েছিলেন, বেড়া টপকাতে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে মৃতের সংখ্যা সামনে আসার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেন। যোগীর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা হয় প্রধানমন্ত্রীর। পরে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিআইজি জানান, ৩০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে যোগী বলেন, 'সঙ্গমের নিকটবর্তী আখড়া মার্গে এই বিয়োগান্তক ঘটনাটি ঘটে। লক্ষ লক্ষ লোক শুভ মৌনী অমাবস্যা স্নানের জন্য জড়ো হয়েছিলেন সেখানে। অনেক তীর্থযাত্রী মঙ্গলবার রাতেই পবিত্র স্নান করেছিলেন। অন্যরা শুভ সময়ের (ব্রহ্ম মুহূর্ত) জন্য অপেক্ষা করে ছিলেন। আগাম ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আনুমানিক ৮ কোটি ভক্তের অপ্রতিরোধ্য চাপে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।'