দুপুর অবধি সবাই জানত যে ফড়ণবীস হবেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, ডেপুটি একনাথ শিন্ডে। তারপর জানা গেল যে শিন্ডে হবেন মুখ্যমন্ত্রী, ফড়ণবীস থাকছেন না সরকারের। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ফের টুইস্ট। বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এই অন্তিম লগ্নের নাটক নিয়ে যদিও বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার। তাঁর সরস মন্তব্য, ফড়ণবীসের মুখটা দেখে লাগছিল একদমই খুশি নন উনি। কিন্তু দিল্লি ও নাগপুর থেকে নির্দেশ এসে গেলে তো আর কিছু করার থাকে না।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে একনাথ শিন্ডের প্রশংসাও করেন শরদ পাওয়ার। তিনি বলেন গোটা চল্লিশ বিধায়কের সমর্থন জোগাড় করা চাট্টিখানি বিষয় নয়। একদিনে এই কাজ সম্পন্নও হয়নি। বিজেপির শিন্ডেকে সমর্থনের প্রসঙ্গে তাঁর নির্লিপ্ত বক্তব্য যে আড়াই বছর আগেই এই কাজ করলেই তো কোনও সমস্যা থাকত না। প্রসঙ্গত, বিজেপি-সেনা জোট ভোটে জিতলেও মুখ্যমন্ত্রীর ইস্যুতে বিবাদের জেরে জোট ভাঙে উদ্ধবরা। তারপর এনসিপি ও কংগ্রেসের হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তবে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তাঁর রাজ, ঘনিষ্ঠ সহযোগী একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় সরকার।
বিরোধী দলনেতা কে হবেন, সেটা নিয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানান এনসিপি সুপ্রিমো। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এনসিপি-ই এই পদ পাবে। বর্তমানে এনসিপি-র ৫৬, কংগ্রেসের ৪২ ও উদ্ধব গোষ্ঠীর মাত্র ১৬ বিধায়ক আছে।
ফড়ণবীসের যে ডিমোশন হল, এতে বিজেপি নেতা খুশি নন বলেই মনে করেন শরদ পাওয়ার। কিন্তু দিল্লি বা নাগপুরের নির্দেশ এলে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হয়ে বলেই দেবেন্দ্রের হাত বাঁধা ছিল বলে অভিমত শরদ পাওয়ারের। প্রসঙ্গত, দিল্লি উল্লেখ করে শরদ পাওয়ার মোদী-শাহ জুটি ও নাগপুর অর্থাৎ আরএসএস-এর হাতের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শিন্ডে যে প্রত্যাশার থেকে অধিক পেলেন সেটাও মনে করেন শরদ পাওয়ার। তাঁর মতে, বিদ্রোহ করার সময় হয়তো আশা ছিল যে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ পাবেন শিন্ডে। একেবারে মুকুট এল তাঁর মাথায়। তিনি যে কেন্দ্রীয় এজেন্সিদের ভয় পান না, সেটা বোঝাতে গিয়ে শরদ পাওয়ার বলেন যে তাঁকে আইটি দফতর চারবার নোটিস পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে একনাথ শিন্ডে ও দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে নিয়ে সরস মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা। টুইটারে তিনি এই ছবিটি পোস্ট করেন।
পোস্টটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে বিদ্রুপের ছলে নতুন সরকারকে স্বাগত জানাচ্ছেন পবন খেরা। তাঁর দলের অভিযোগ যে উদ্ধবের বিধায়কদের ইডি ও সিবিআই, সঙ্গে টাকা দিয়ে ভাঙিয়েছে বিজেপি। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই মিম। প্রসঙ্গত যেদিন থেকে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল গান্ধীর ডাক পড়েছে, তবে থেকেই ইডি-র ওপর খড়গহস্ত কংগ্রেস।