সামনেই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন। তার ঠিক আগেই দেশি প্রজাতির গোরুকে 'রাজ্যমাতা-গোমাতা' বলে ঘোষণা করল মহারাষ্ট্রের শিন্ডে সরকার।
তাদের বক্তব্য, ভারতীয় গোরুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং গোরুর দুধের পুষ্টিগুণকে স্বীকৃতি দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এই ইস্যুতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যার মোদ্দা কথা হল, ভারতীয় গোরুর সংরক্ষণ বৈদিক যুগ থেকেই হয়ে আসছে। এবং বর্তমান রাজ্য সরকার সেই ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।
ভারতীয় গোরুর 'বৈদিক সংযোগ ও পুষ্টি ক্ষেত্রে অবদান'
মহারাষ্ট্র সরকারের কৃষি, দুগ্ধজাত পণ্য উন্নয়ন, পশুকল্যাণ এবং মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
সেই নির্দেশিকায় গোরুর দুধের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, প্রাচীন ভারতে যে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করা হত, সেই ব্যবস্থায় গোরুর দুধের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
'জৈব চাষে দেশি গোরুর অবদান'
মহারাষ্ট্র সরকারের ওই নির্দেশিকায় গোরুর দুধের পাশাপাশি গোরুর মল, অর্থাৎ গোবরেরও ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জৈব চাষ প্রণালীতে গোবর একটি অপরিহার্য উপাদান। যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
মহারাষ্ট্র সরকারের ঘোষণায় রাজনৈতিক জল্পনা
বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে শিন্ডে সরকারের এহেন ঘোষণা নিয়ে যথারীতি রাজনৈতিক কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ভোটারদের হিন্দু ভাবাবেগ খুঁচিয়ে তুলে ইভিএমে তার সুফল পেতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপির জোটসঙ্গী তথা মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর অনুসারে, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আয়োজিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেই এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে স্থির করা হয়েছে, তারা এমন একটি প্রকল্প চালু করবে, যার অধীনে 'গোশালা' বা খাটালগুলিতে ভারতীয় গোরুর দেখাশোনা করার জন্য দৈনিক ৫০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে।
সরকারের দাবি, এর ফলে যে খাটালগুলি লোকসানে চলছে, সেগুলির মালিকরা লাভবান হবেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফ থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে 'মহারাষ্ট্র গোসেবা কমিশন'।
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ এই প্রকল্প প্রসঙ্গে বলেন, 'আমাদের কৃষকদের কাছে দেশি গোরু একটি আশীর্বাদ। সেই জন্যই আমরা দেশি গোরুকে রাজ্যমাতা হিসাবে ঘোষণা করেছি। সেইসঙ্গে, গোশালায় দেশি গোরুর দেখভালেও আমরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।'
উল্লেখ্য, শীঘ্রই মহারাষ্ট্র বিধানসভার ২৮৮টি আসনে নির্বাচন হবে। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি।