মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। রাজনৈতিক মহলে আগে থেকেই কানাঘুষো চলছিল এই নিয়ে। এরই মাঝে অবশ্য শিবসেনার তরফ থেকে দাবি তোলা হয়েছিল যাতে একনাথ শিন্ডেকেই মুখ্যমন্ত্রী রাখা হয়। তবে সেই সব দাবি ধোপে টেকেনি। এহেনপরিস্থিতিতে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী ৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবর ফড়ণবীস শপথ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। (আরও পড়ুন: 'ধর্মীয় অপরাধের শাস্তি' পালনের সময় স্বর্ণমন্দিরে সুখবীর সিং বাদলের ওপরে চলল গুলি)
আরও পড়ুন: তৃণমূলের দেখানো পথে এবার ভেঙেই যাবে ইন্ডিয়া? অখিলেশেব ভাবগতিকে জল্পনা
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে নাকি দাবি করা হয়েছিল, একাথ শিন্ডেকে যাতে অন্তত ৬ মাসের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি করেছিল, এভাবে ৬ মাসের মধ্যে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হলে তা প্রশাসনিক কাজে সমস্যা তৈরি করবে। তারপরই নাকি শিন্ডে জানিয়েছিলেন, বিজেপির সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে একনাথ শিন্ডে থানেতে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। এই আবহে জল্পনা তৈরি হয়েছিল মারাঠা রাজনৈতিক মহলে। (আরও পড়ুন: বক্তৃতায় বিস্ফোরক শেখ হাসিনা, ইউনুসের নাম করে মারাত্মক দাবি তাঁর)
উল্লেখ্য, সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে ২৮৮-র মধ্যে ২৩৩টি আসনে জয় পেয়েছে মহায্যুতি জোট। তার মধ্যে আবার বিজেপি একাই ১৩২টি আসনে জিতেছে। এই আবহে মহারাষ্ট্রের পবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ছিল এই ক'দিন। রিপোর্ট অনুযায়ী, দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়ে প্রথম থেকেই অনড় ছিল বিজেপি। তবে সূত্রের দাবি, একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে ইচ্ছুক ছিলেন না। তবে সম্প্রতি তিনি কিছুটা 'নরম' হয়েছেন। তবে তার আগে বিহারের উদাহরণ তুলে ধরে শিবসেনার দাবি ছিল, একনাথকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৪ সালে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এরপর ২০১৯ সালের ভোটের পর তিনদিনের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবেন্দ্র। ২০১৯ সালেই জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়েছিল বিজেপি এবং শিবসেনা। তবে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিবাদের জেরে উদ্ধব ঠাকরে হাত মিলিয়েছিলেন এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গে। পরবর্তীতে শিবসেনাকে ভাঙিয়ে এনে জোট সরকার গড়ে বিজেপি। সেই জোটে বিজেপি 'বড় দাদা' হলেও তারা মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয় একনাথ শিন্ডেকে। সেবার কোনও পদে থাকবেন না বলে ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন দেবেন্দ্র। পরে দলের 'নির্দেশে' তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হন। পরে এনসিপি ভাঙিয়ে এনেও জোটে সামিল করে বিজেপি। অজিত পাওয়ারও উপমুখ্যমন্ত্রী হন। তবে এবার বিজেপি একাই 'ম্যাজিক ফিগার'-এর কাছে পৌঁছে গিয়েছে। দলের 'স্ট্রাইক রেট' ৮৫ শতাংশের ওপরে। এই আবহে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছিল।