ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ অবস্থানের আয়োজন করেছিল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। সেই কর্মসূচিতে তৃণমূলের তরফ থেকে যোগ দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। সেখানেই ভাষণ দেওয়ার সময় নাকি তৃণমূল সাংসদ বলে ফেলেছিলেন, ভারতে ২০০ কোটি মুসলিম আছে। আর তা নিয়ে বিজেপির তরফ থেকে কটাক্ষ শুরু করল বিজেপি নেতৃত্ব। (আরও পড়ুন: ‘গুজব’ ছড়াতেই হিংসায় পুড়ল নাগপুর, জখম ২৫ পুলিশ, আটক ২০; কী কারণে ঝামেলা?)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ তুলসির, ঘুম উড়ল ইউনুসের, ঢাকা বলল...
গতকাল ওয়াকফ সংশোধনীর বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে মহুলা বলেছিলেন, 'আমাদের কলকাতায় যে কালীঘাট মন্দির আছে, সেখানের কমিটিতে কী আমরা কোনও মুসলিমকে রাখব? না, রাখব না। শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটিতে আপনারা বলবেন কোনও মুসলিমকে অন্তর্ভুক্ত করতে? কখনও এটা ওরা মানবে? তাহলে এই ওয়াকফে কেন অ-মুসলিমরা যাবেন। আমি বুঝতে পারছি না এটা। আমাদের দেশে ২০০ কোটিরও বেশি (সম্ভবত ২০ কোটির বেশি বলতে চেয়েছিলেন) মুসলিম আছেন। ইন্দোনেশিয়ার পরই সর্বোচ্চ মুসলিম আমাদের দেশে...' মহুয়া আরও বলেন, 'ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করা শুধুমাত্র মুসলিমদের দায়িত্ব নয়, দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কর্তব্য এটা।' (আরও পড়ুন: পডকাস্টে পাকিস্তানের আসল রূপ তুলে ধরেন মোদী, শুনেই 'ন্যাকা কান্না' ইসলামাবাদের)
আরও পড়ুন: ভারতীয় মুসলিমদের বাংলাদেশে নিতে চায় 'তৌহিদি জনতা', হুঁশিয়ারি লং মার্চের
এবার মহুয়ার ভাষণের এই অংশটুকু সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তা পোস্ট করে বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ লেখেন, '১৪০ কোটি জনসংখ্যার ভারতে ২০০ কোটি মুসলিম! ব্রেকফাস্টে কী খেয়েছিলেন মহুয়া?' এদিকে কেয়া ঘোষের সেই পোস্ট শেয়ার করে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আবার লেখেন, 'তারকেশ্বর ডেভলপমেন্ট বোর্ডের মাথায় ফিরহাদ হাকিমকে কেন বসানো হয়েছিল? এরকম আরো উদাহরণ আছে সেগুলো পরে দেব। কিন্তু আপাতত মহুয়াদেবী কী খেয়ে এই কথা বলেছেন সেটা জানার ইচ্ছা আছে।'
এদিকে ওয়াকফ সংশোধনীর প্রতিবাদে আয়োজিত অবস্থান বিক্ষোভের প্রতিবাদে আবার রাস্তায় নেমেছিলেন হিন্দুত্ববাদীরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্দু বিক্ষোভকারীরা মুসলিম সংগঠনগুলোর সামনে বসে পড়ে হনুমান চালিশা পাঠ করে। রাস্তায় বসেই তারা জয় শ্রীরাম স্লোগানও তোলেন তারা। মুসলিম পার্সোনা ল বোর্ডের বিক্ষোভ নিয়ে বিজেপি নেতা প্রদীপ ভাণ্ডারী বলেন, 'অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড প্রমাণ করেছে যে তারা কংগ্রেসের বি টিম এবং এটিও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এটি ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার পক্ষে বিপজ্জনক। ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনটি কৃষক, দরিদ্র মুসলিম ও দলিতদের অধিকার এবং বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধানের বাস্তবায়ন সম্পর্কিত। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে রাস্তায় পিকেটিং অসাংবিধানিক। যে কোনও অসাংবিধানিক কাজকে আইনত মোকাবিলা করব আমরা।'
এদিকে ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন বিজেপি সাংসদ এবং ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪-এর যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। তিনি দাবি করেন যে এই ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি সমাজে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং সংসদের আইন প্রণয়নের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড ইতিমধ্যেই কমিটির কাছে তাদের উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়েছে এবং সেই বিষয়গুলি রিপোর্টে বিবেচনা করা হয়েছে।