সম্প্রতি গৃহায়ণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ এস্টেট ডিরেক্টরেট মৈত্রকে তাঁর সরকারি বাংলো খালি করতে বলেছিল। 'ঘুষের বদলে সংসদে প্রশ্ন করা' মামলায় লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন মহুয়া। তার পরেই তাঁকে সরকারি বাংলো খালি করতে বলা হয়েছিল। এই আবহে দ্বিতীয়বার নোটিশ পাঠিয়ে সরকারি বাড়ি খালি করতে বলা হল তৃণমূল নেত্রীকে। সূত্রের খবর, মহুয়া মৈত্রকে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে এই নোটিশের জবাব দিতে হবে। (আরও পড়ুন: কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে অভিযানে ইডি, হানা মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতে)
আরও পড়ুন: রামমন্দির নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়াচ্ছে এই ভুয়ো বার্তা, রামভক্তরা হয়ে যান সতর্ক
এর আগে সরকারি বাংলো খালি করার বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার সেই পিটিশনে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছিল। তাতে ৭ জানুয়ারির মধ্যে বাড়িটি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা না হলে দখলদার উচ্ছেদ আইন অনুযায়ী তাঁকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে মহুয়ার আবেদন ছিল, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফল প্রকাশ পর্যন্ত তাঁকে তাঁর সরকারি বাসস্থানে থাকার অনুমতি দেওয়া হোক। তবে এই মামলায় কোনও রায় দেয়নি দিল্লির উচ্চ আদালত। উলটে বিষয়টি নিয়ে ডিরেক্টরেট অফ এস্টেটের কাছেই আবেদন জানাতে বলা হয়েছিল মহুয়াকে। এরপর মহুয়াকে তাঁর আবেদন প্রত্যাহারের অনুমতি দেয় আদালত।
এদিকে লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা করেছেন মহুয়া। গত ৩ জানুয়ারি লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলকে মহুয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। মহুয়াকে কেন লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হল, তা নিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে লোকসভার সচিবালয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ মার্চ।
উল্লেখ্য, গত শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভায় পেশ হয়েছিল মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট। এর আগে এথিক্স কমিটিতে সেই রিপোর্ট গৃহীত হয়েছিল ৬-৪ ভোটে। সেই রিপোর্টেই মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এছাড়াও তদন্তেরও সুপারিশ ছিল সেই রিপোর্টে। সেই অনুযায়ী, লোকসভায় মহুয়ার সাংসদপদ খারিজের পক্ষে ভোটাভুটি হয় এবং মহুয়া বহিষ্কৃত হন। এর আগে সিবিআই-এর কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে 'টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন' করার মামলায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহদরাই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। পরে সংবাদমাধ্যমে মহুয়া মেনে নিয়েছিলেন যে তিনি হিরানন্দানিকে আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। তবে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন মহুয়া। এদিকে এই বিতর্ক নিয়ে হলফনামা দিয়েছিলেন শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি। তাতে অবশ্য হিরানন্দানি দাবি করেছিলেন, মহুয়া তাঁকে চাপে রাখতেন। এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশও করেছিল সংসদের এথিক্স কমিটি। আর সাংসদপদ হারিয়ে এখন সরকারি বাংলো হাতছাড়া হতে চলেছে মহুয়ার।