একটি সাবস্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর শাটডাউন করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আকস্মিক এই ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকবে। জানা গেছে, বিমানবন্দর ও সংলগ্ন এলাকার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ১৬ হাজারেরও বেশি পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ১০টি দমকল ইঞ্জিন ও ৭০ জন দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: হামাস যোগে ধৃত ভারতীয়কে দেশছাড়া করতে পারবেন না ট্রাম্প, নির্দেশ মার্কিন আদালতের)
জানা গেছে, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় সাবস্টেশনে সংলগ্ন হিলিংডনের হায়েস এলাকায় ২০০ মিটারের একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। কালো ধোঁয়ায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরের জানালা ও দরজা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দমকল কর্মীরা।ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুনের ছবি, ভিডিও। অন্যদিকে, হিথরো বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর।২০২৪ সালে ওএজি-এর এক সমীক্ষায় এটিকে বিশ্বের চতুর্থ ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে স্থান দেওয়া হয়। বছরে ৫১ মিলিয়নেরও বেশি যাত্রী চলাচল করেন এই বন্দর দিয়ে। শুক্রবার ভোরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, 'একটি সাবস্টেশনে আগুন লেগে যাওয়ায় হিথরোয় পর্যাপ্ত বিদ্যুতের অভাব দেখা দিয়েছে। আমাদের যাত্রী এবং সহকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ২১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হচ্ছে।' বিবৃতিতে যাত্রীদের বিমানবন্দরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী ঘোষণার জন্য সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। (আরও পড়ুন: জাতীয় সঙ্গীতের 'অপমান' করার অভিযোগ নীতীশের বিরুদ্ধে, সামনে এল ভিডিয়ো, তোপ RJD-র)
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিমানের গন্তব্য পরিবর্তন করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ধরে এই বিভ্রাট চলতে পারে।স্কটিশ অ্যান্ড সাদার্ন ইলেকট্রিসিটি নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, তারা দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, 'আমরা বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে কাজ করছি। আমাদের অগ্রাধিকার হল স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মী এবং উদ্ধারকারী দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।' (আরও পড়ুন: বালোচ ট্রেন হাইজ্যাকে মৃতের সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি? মর্গ থেকে দেহ 'লোপাট')
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারপতির বাড়িতে মিলল টাকার পাহাড়, তড়িঘড়ি ডাকা হল কলেজিয়ামের বৈঠক
অন্যদিকে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীদের একাংশ। অনেকের প্রশ্ন, কী এমন বিদ্যুৎ বিপর্যয় যে, যার জন্য একটি ব্যস্ত বিমানবন্দরকে সারা দিনের জন্য বন্ধ করে দিতে হয়? কারও আবার প্রশ্ন, হিথরোর মতো বিমানবন্দরে কেন জেনারেটর বা বিকল্প কোনও উপায়ে বিদ্যুতের জোগান দিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হচ্ছে না?কেউ কেউ মজার ছলে এই পরিস্থিতির তুলনা করেছেন বিখ্যাত হলিউড সিনেমা 'ডাই হার্ড ২'-এর সঙ্গে, যেখানে একটি বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার গল্প দেখা যায়। শুধুমাত্র যাত্রী নয় এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং বিমানবন্দর শাটডাউনে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।