স্থির করেছিলেন, 'মাল্টি-স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং গবেষণা কেন্দ্র' গড়ে তুলবেন। সেই কারণেই, বেঙ্গালুরু শহরে ৫ একর জমি চেয়ে একটি আবেদন করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ছেলে, তথা সিদ্ধার্থ বিহার ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন রাহুল এম খাড়্গে। কিন্তু, হঠাৎই সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নিলেন তিনি।
তবে কি বিতর্ক এবং বিবাদ এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন রাহুল? একথা বলার কারণ হল, ইতিমধ্যেই মুডা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় বেজায় বিপাকে পড়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং তাঁর স্ত্রী পার্বতী।
মনে করা হচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটেই কংগ্রেস সভাপতির ছেলে তাঁর অধীনে থাকা ট্রাস্টের জন্য বরাদ্দ জমি পাওয়ার পরও প্রকল্প পরিকল্পনা রূপায়ণ না করেই পিছিয়ে এলেন।
এদিকে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে টুইট করেছেন। তাঁর মতে এই ঘটনা 'ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপোষণ এবং স্বার্থের সংঘাত'-এর আদর্শ উদাহরণ।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ লহর সিং সিরোইয়াও তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে একই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য হল, খাড়্গে পরিবার আবার কবে থেকে প্রথম শ্রেণির ব্যবসায়ী পরিবার হয়ে গেল, যে এই ধরনের পরিষেবা ও পরিকাঠামো তৈরি করার জন্য তাদের নামে জমি বরাদ্দ করতে হবে? এটা কি ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপোষণ এবং স্বার্থের সংঘাত নয়?
বিরোধীদের এই প্রশ্নের জবাব দিতে এক্স হ্যান্ডেলে পালটা পোস্ট করেছেন মল্লিকার্জুন খাড়্গের ছোট ছেলে প্রিয়াঙ্ক খাড়্গে। তিনি একটি চিঠির স্ক্রিন শট শেয়ার করেছেন।
সংশ্লিষ্ট চিঠিটি পাঠানো হয়েছে কর্ণাটকা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট বোর্ড (কেআইএডিবি)-এর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে। ২০ সেপ্টেম্বর (২০২৪) লেখা ওই চিঠিতে রাহুল জানিয়েছেন, বিভিন্ন নাগরিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য তিনি যে জমি চেয়েছিলেন, সেই আবেদন বাতিল করছেন।
রাহুলের বক্তব্য, সিদ্ধার্থ বিহার ট্রাস্টের উদ্দেশ্য হল, আরও বেশি করে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে যুবসমাজকে শক্তিশালী করা। তরুণদের প্রযুক্তিগতভাবে আরও দক্ষ করে তোলা।
এই প্রসঙ্গে তাঁর পরিকল্পনা ওই চিঠিতে ব্যাখ্য়াও করেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, 'যে মাল্টি-স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার গড়ে তোলার কথা ভাবা হয়েছিল, তার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে তরুণদের আরও বেশি করে কাজের যোগ্য করে তোলা এবং তাঁদের শিল্প ক্ষেত্রে ও ভবিষ্যতে নিয়োগের জন্য প্রস্তুত করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। পাশাপাশি, যে পড়ুয়াদের কলেজে যাওয়ার সামর্থ নেই, তাঁদের সাহায্য করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।'
এই প্রসঙ্গে রাহুলের ভাই প্রিয়াঙ্ক জানান, সিদ্ধার্থ বিহার ট্রাস্টের নামেই কেআইএডিবি-র কাছে ওই ৫ একর জমি চাওয়া হয়েছিল। কারণ, আগামী দিনে ওই অঞ্চলে শিল্পের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
প্রিয়াঙ্ক আরও জানিয়েছেন, সিদ্ধার্থ বিহার ট্রাস্ট এমন একটি সমাজসেবী সংস্থা যার লক্ষ্য হল সমাজের সার্বিক শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক উন্নতি ঘটানো। এটি কোনও লাভজনক সংস্থা নয়। তাই, কেআইএডিবি-র কাছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য জমি চাওয়ার যোগ্যতা এই ট্রাস্টের রয়েছে।
প্রিয়াঙ্কের দাবি, পরিবর্তিত কিছু পরিস্থিতির কারণেই তাঁর দাদা ওই জমি বরাদ্দ করার আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কেআইএডিবি-র কাছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিকল্পনা এবং জমি বরাদ্দ করার আবেদন জমা দিয়েছিল সিদ্ধার্থ বিহার ট্রাস্ট। একমাস পর সেই আবেদন মঞ্জুর হয়।
এরপরই আসরে নামে বিজেপি। তাদের অভিযোগ ছিল, ক্ষমতার অপব্যবহার করে মল্লিকার্জুন খাড়্গের ছেলে ওই জমি আদায় করেছেন।