অক্সফোর্ডে আলোচনা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এদিকে ২০৬০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, তাতে কার্যত আপত্তি জানিয়েছিলেন মমতা। তিনি এই কথার সঙ্গে কার্যত একমত বা বিশ্বাস করতে চাননি বলে খবর। আর মমতার এই মতামতকে নিয়ে এবার তীব্র সমালোচনা করছে বিজেপি।
একটি ভিডিও ক্লিপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, তিনি এই প্রজেকশনের সঙ্গে 'একমত নন'। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। ভারতে বিজেপি এনিয়ে তীব্র কটাক্ষ করছে।
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজে 'পশ্চিমবঙ্গে সামাজিক উন্নয়ন- কন্যা, শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন' শীর্ষক কথোপকথনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি ২০৬০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের প্রথম অর্থনীতি হয়ে উঠবে বলে দাবি করার সাথে তিনি একমত নন।
সঞ্চালক বলেছিলেন, ভারত ইতিমধ্যেই ব্রিটেনকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভারত এখন বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। অচিরেই এটি হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০৬০ সালের মধ্যে এটি বিশ্বের প্রথম অর্থনীতি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে,' আলোচনার সঞ্চালক একথা বলার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমি এটি ভিন্নমত পোষণ করব।
মমতা বলেছিলেন, ‘এমন অনেক বিষয় আছে যা নিয়ে আমার এখানে কথা বলা উচিত নয়। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়গুলো আমি প্রকাশ করতে পারব না। আমার অন্য মতামতও আছে। কারণ কোভিড পরবর্তী সময়ে প্রতিটি দেশই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, বিশ্বের টালমাটাল পরিস্থিতিতেও রয়েছে। পৃথিবীতে যদি অর্থনৈতিক যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি চলতে থাকে, তাহলে আমরা কীভাবে আশা করতে পারি যে আমরা লাভবান হব? আসুন আমরা লাভের আশা করি, আমরা কেবল আশা করতে পারি। আমাদের স্বপ্ন দেশের সেরাটা দেওয়া উচিত। তবে এটা নির্ভর করছে,’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়।
অমিত মালব্য তাঁর পোস্টে অভিযোগ করেছেন যে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়া নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা রয়েছে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ায়। এটা সত্যিই লজ্জাজনক। তিনি যে সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত আছেন তার জন্য লজ্জাজনক। বিদেশের মাটিতে কারা এমন আচরণ করে?' মালব্য এক্স-এ পোস্ট করেছেন।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের কথা স্মরণ করে বলেন, বিদেশের মাটিতে ভারতের অর্জনকে খাটো করে দেখা হচ্ছে।
'এটা অবিশ্বাস্য যে বিদেশের মাটিতে ভারতের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার বিরোধিতা করেছেন এবং তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এটা রাহুল গান্ধীর মতো বিদেশের মাটিতে ভারতের অর্জনকে খাটো করে দেখতে চায় এমন ভারত বদনামী ব্রিগেড ছাড়া আর কিছুই নয়। শেহজাদ পুনাওয়ালা এক্স-এ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ইন্ডিয়া জোট ভারতের কৃতিত্বকে ঘৃণা করে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভারত বিরোধী বক্তব্য দেশে তিনি যে পদে রয়েছেন তার জন্য অপমানজনক।
তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশের মাটিতে ভারতের সুনাম নষ্ট করছেন। তার ভারতবিরোধী বক্তব্য শুধু প্রতিটি বাঙালি ও ভারতীয়র জন্যই লজ্জাজনক নয়, এটি তার সাংবিধানিক পদের জন্যও অপমানজনক। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনি যে ব্যর্থ হয়েছেন তা স্পষ্ট, কিন্তু নিজেকে ভারতীয় বলতেও কি দ্বিধা করেন? আপনি কি সত্যিই ভারতীয়?"