বিপর্যয়ের আবহে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ থাকল প্রায় ১৮ ঘণ্টা। এর জেরে এয়ার ইন্ডিয়া সহ বিশ্বের একাধিক উড়ান সংস্থার ১৩৫০টি উড়ান বাতিল হয়েছে। এমনকী বিপর্যয়ের জেরে পিছিয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন যাত্রাও। যেখানে শনিবার সকালেই লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর কথা ছিল মমতার, সেখানে তিনি শনিবার সন্ধ্যায় উড়ানে বসবেন বলে দাবি করা হয়েছে আনন্দবাজারের রিপোর্টে। জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার বিমানে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড়বে মমতার উড়ান। এরপর সেটি রবিবার ভারতীয় সময় দুপুর (লন্ডনের সকাল) লন্ডনে পৌঁছবে। এদিকে জানা গিয়েছে, প্রথমে নাকি গ্যাটউইক বিমানবন্দরে নামার কথা ভাবেছিলেন মমতা। তবে অবশেষে হিথরোতে বিমা পরিষেবা ফের শুরু হওয়ায় সেখানেই অবতরণ করবে মমতার বিমান। (আরও পড়ুন: ইউনুসে 'না' বাংলাদেশি সেনা প্রধান ওয়াকারের... বিস্ফোরক উপদেষ্টা আসিফ)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি সেনার ওপর হামলার নিদান, তারপরই ক্ষমা চেয়ে ‘পথে’ ফিরলেন সমন্বয়ক
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল সকালই লন্ডনের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কেলগ কলেজে বক্তৃতা রাখার কথা তাঁর। এর জন্যে আগেভাগে সবাইকে দায়িত্বও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। তবে মমতার লন্ডন সফর পিছিয়ে যায়। উল্লেখ্য, ২০ মার্চ লন্ডন বিমানবন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর জন্যে হিথরো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। বাতিল হয় সব উড়ান। এই পরিস্থিতিতে মমতার সফর পিছোচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: ভারতের 'ওয়ান্টেড' অপরাধীকে জামাই আদর নওয়াজ শরিফের, ইসলামাবাদকে ধুয়ে দিল MEA)
আরও পড়ুন: 'ধমক' খাওয়া হাসনাতের সাহস কিন্তু কম না! বাংলাদেশ সেনাকেই চ্যালেঞ্জ NCP নেতার…
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২২ মার্চ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে উড়ানে চেপে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল মমতার। সেদিন রাত ৮টাতেই হিথরোতে নামার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, হিথরো বিমানবন্দরে বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের জেরে সেখানে বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই আবহে ঠাসা সূচিতে বদল আনা হয়। (আরও পড়ুন: ট্রুডো জমানায় ভারত-কানাডা সম্পর্ক ঠেকে তলানিতে, নয়া PM মার্ককে কী বার্তা ভারতের)
জানা যায়, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে আগুন লাগার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাতে ফের চালু হয় উড়ান পরিষেবা। হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমান। কর্তৃপক্ষ এখনও অগ্নিকাণ্ডের কারণ নির্ধারণ করতে পারেনি, তবে সন্দেহজনক কোনও নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি কার হয়েছে।
এদিকে মমতার এই লন্ডন সফর ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক তরজায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলা। ১৭ মার্চ মুখপাত্র গণশক্তিতে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে দাবি করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী যে আগামী ২৭ মার্চ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবেন তার কোনও তথ্যই নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এলিজাবেথ ব্রটরাইটের কাছে। পরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, শুধুমাত্র অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নয়, আরও একধিক ব্রিটিশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমন্ত্রণ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, ব্রিটেনের মোট তিনটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বক্তৃতা দেওয়ার জন্যে। সরকারের দাবি অনুযায়ী, লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সের প্রাক্তন পড়ুয়া এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজ আমন্ত্রণ জানিয়েছে মমতাকে। এদিকে সরকার জানিয়েছে, শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে লেখিকা হিসেবে।
জানা যায়, ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর বাংলার উন্নয়নের মডেলের জন্য প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই আবহে তাঁর অভিজ্ঞতার বিষয়ে কেলগ কলেজে বক্তৃতা রাখার জন্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অক্সফোর্ডের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর। মার্চের প্রথমদিকে আবার লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সের প্রাক্তন পড়ুয়াদের তরফে দীপ্তেন্দু রায়ও আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এছাড়া লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইল এন্ড ইনস্টিটিউট-এর ডিরেক্টর সোফিয়া কোল্লিগননের তরফ থেকেও চ্যাথাম হাউসে অনুষ্ঠিত হতে চলা আলোচনা সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।