মুম্বই সফরের দ্বিতীয় দিনে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে পাশে দাঁড় করিয়ে কংগ্রেসের ‘ক্যাপ্টেন’ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন ‘চ্যালেঞ্জার’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কারণ অন্য হলেও মমতার মতোই কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে কংগ্রেসের মতাদর্শেই নতুন দল গড়েছিলেন শরদ পাওয়ার। পরে অবশ্য জাতীয় রাজনীতিতে সমীকরণ বদলে জোট সঙ্গী হিসেবে কংগ্রেসেরই হাত ধরেছিলেন শরদ। এহেন শরদ পাওয়ারকে পাশে দাঁড় করিয়ে মমতার প্রশ্ন, ‘ইউপিএ কই?’ জবাবও দিলেন নিজেই, ‘ইউপিএ নেই!’ মমতার এই বাউন্সার যেন কংগ্রেসকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়ার জন্য। তবে কংগ্রেস সেই বাউন্সারের ভয় কাটিয়ে উঠে ক্রিজে টিকে থাকতে পারে কি না, তা তো সময়ই বলবে।
মোদী জমানার আগে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন যে জোট ১০ বছর ভারত শাসন করেছে, সেই ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা ইউপিএ-তেও আছেন শরদ পাওয়ার। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ বিরোধী প্রধান মুখ ইউপিএ। দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের কাছাকাছি সময় ধরে এই ইউপিএ চেয়ারপার্সন পদে রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। মাঝে শিবসেনা সোনিয়ার জায়গায় ইউপিএ চেয়ারপার্সন হিসেবে শরদ পাওয়ারের নাম প্রস্তাব করলেও, তাতে আমল দেয়নি কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী ঐক্যের কথা বলেও কংগ্রেসকে ফার্স্ট বেঞ্চ থেকে পিছনে পাঠাতে মরিয়া মমতা। আঞ্চলিক দলগুলিকে সাথে নিয়ে যে তা করা সম্ভবও, মমতা সেই কথা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
মমতার দাবি, আগামিদিনে নতুন করে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি হবে৷ যারা বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই করছে, তারাই ওই জোটে থাকবে৷ কারণ, তাঁর মতে, দেশে যেমন ফ্যাসিজিম চলছে, এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিকল্প দরকার৷ এদিন একই কথা শোনা গিয়েছেন শরদ পাওয়ারের মুখেও৷ পাওয়ার বলেন, ‘যাঁরা বিজেপি বিরোধী, তাঁদের এক মঞ্চে আসা উচিত৷’ শরদ পাওয়ার বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিকল্প তৈরি করাই তাঁর (মমতার) লক্ষ্য৷ সেই উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি এসেছিলেন৷ সেই নিয়েই আলোচনা হয়েছে৷’ এর পরই তিনি বলেন, ‘যাঁরা বিজেপি বিরোধী, তাঁদের এক মঞ্চে আসা উচিত৷’ বার্তাটা স্পষ্ট, আমরা জোট গড়ছি। কংগ্রেস চাইলে যোগ দিতে পারে। তবে তাদের নেতৃত্ব মানা হবে না।
গত কয়েকদিনে বিজেপিকে মমতা যতটা বিঁধেছেন, তার থেকে বেশি হয়ত বিঁধেছেন কংগ্রেসকে। তাঁর কথায়, ‘যারা লড়াই করে, তাদের নিয়ে জোট হবে৷ কেউ লড়াই করতে না চাইলে কী করা যাবে৷ এখন ইউপিএ বলে কিছু নেই৷ জোট নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা হবে৷’