আদতে তিনি ছিলেন ওডিশার রৌরকেল্লার বাসিন্দা। বর্তমানে থাকেন তাঁর দুবাইয়ের 'প্রাসাদে'! তাঁর নাম - সৌমেন্দ্র জেনা, পেশায় শিল্পোদ্যোগী। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় নিজের অসামান্য সাফল্যের কাহিনি তুলে ধরেন এই তরুণ। যা অনুপ্রাণিত করছে অগুন্তি মানুষকে।
নিজের সোশাল মিডিয়া পোস্টে পাশাপাশি দু'টি ছবি পোস্ট করেছেন সৌমেন্দ্র। ছবি দু'টি একেবারেই পরস্পরের থেকে বিপরীত। প্রথম ছবিটি হল একটি সেমিপাকা কুঁড়ে ঘরের। যে ঘরে বসবাসকারী পরিবারের সন্তান হিসাবেই জন্ম হয়েছিল সৌমেন্দ্রর। জীবনের প্রথম বছরগুলি এই ঘরেই বেড়ে উঠেছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় ছবিটি হল একটি প্রাসাদোপম বাড়ির। যার সামনে দাঁড় করানো রয়েছে দু'টি বিলাসবহুল গাড়ি। এই প্রাসাদই সৌমেন্দ্রর বর্তমান ঠিকানা। যা রয়েছে দুবাইয়ে। ওই বিলাসবহুল গাড়ি দু'টিও তাঁর।
এই জোড়া ছবির ক্যাপশনে সৌমেন্দ্র লিখেছেন, 'এই হল ওডিশার রৌরকেল্লায় আমার সেই বাড়ি। যেখানে আমার জন্ম হয়েছিল, আমি বেড়ে উঠেছিলাম এবং আমি ওখানে থেকেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত (১৯৮৮ থেকে ২০০৬ সাল) পড়াশোনা করেছিলাম। ২০২১ সালে আবার ওখানে গিয়েছিলাম। স্মৃতিগুলো ফিরে দেখার জন্য। আজ, দুবাইতে আমার বর্তমান ঠিকানা আদতে গত ১৭ বছর ধরে আমার ক্লান্তিহীন কঠোর পরিশ্রম, না ঘুমিয়ে কাটানো বহু রাতের কাহিনি শোনাচ্ছে। এখানে কোনও শর্টকাট নেই। সাফল্য়ের জন্য সময় লাগে। তোমার অজুহাত কী?'
সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট সামনে আসতেই মুহূর্তে তা বহু মানুষের নজর কাড়ে। ভাইরাল হয় পোস্টটি। অনেকেরই বক্তব্য হল, তাঁরা এই পোস্টটি দেখে এবং পড়ে নিজেরা অনুপ্রাণিত বোধ করছেন!
বহু মানুষ এই পোস্টে কমেন্ট করেছেন। সৌমেন্দ্রকে তাঁর সাফল্য়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। যেমন একজন লিখেছেন, 'ভাই, এটা তো দারুণ - নিজের অতীতের দারিদ্র্য এভাবে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য সাহস থাকা দরকার। এই অতীত হল সেই জায়গা, যেখান তাঁরা উঠে এসেছেন। আজকালকার দিনে বহু মানুষই তাদের পূর্বপুরুষের ভিটেয় যাওয়া পছন্দ করে না। যা হয়তো শতাব্দী প্রাচীন কোনও আবাস্থল। যেখানে তাদের বাবা-মা, এবং তাঁদেরও বাবা-মায়েরা পুরো জীবন কাটিয়েছিলেন। ধন্যবাদ।'
অনেকে আবার সৌমেন্দ্রর সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত হতে পারেননি। তাঁদের মতে, শুধুমাত্র এই একটি ঘটনাকে মাপকাঠি করে সকলের পরিস্থিতি বিচার করা যায় না।
একজন যেমন লিখেছেন, 'সাফল্য় আসতে সময় লাগে, প্রচেষ্টা লাগে, ভাগ্য লাগে এবং সাহায্যও লাগে। দুবাইয়ে থেকে তুমি যে সাফল্য অর্জন করেছ, ওডিশায় থেকে একই প্রয়াস করলেও কেউ সমান সাফল্য পাবে না।'
একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে আরও এক নেট ইউজারের কমেন্টে। তিনি লিখেছেন, '১৭ বছর কঠোর পরিশ্রম করলেই সকলে এই সাফল্য পায় না। এখানে অবশ্যই ভাগ্য়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'