মহারাষ্ট্র ফেরত স্বরাজ্যের বাসিন্দাদের সম্পর্কে Covid-19 সংক্রান্ত সরকারি হেল্পলাইনে তথ্য দেওয়ার জেরে বিহারের সীতামাঢ়ি জেলায় গণপিটুনিতে প্রাণ হারালেন ২৪ বছরের এক তরুণ।
সোমবার নিজের কাকার বাড়ি যাওয়ার পথে রুন্নিসইদপুর এলাকায় বাবলু কুমার নামে ওই তরুণের উপরে চড়াও হয় একদল। বেধড়ক মারধরে গুরুতর জখম হলে বাবলুকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রুন্নিদাসপুর প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখানে তাঁকে রেফার করা হয় মজফ্ফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বাবলুকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, হেল্পলাইনে ফোন করে এর আগে মহারাষ্ট্র থেকে বিহারের মাধাউল গ্রামে ফিরে আসা দুই পরিবার সম্পর্কে বাবলু তথ্য দিয়েছিলেন। তার জেরেই তাঁর উপরে ক্ষোভ জন্মায় ওই পরিবার ও তাঁদের আত্মীয়দের।
বাবলুর দাদা গুড্ডু জানিয়েছেন, খবর পেয়ে মাধাউল গ্রামে এসে মহারাষ্ট্র ফেরত দুই পরিবারের সদস্যদের জোর করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করায় পুলিশ। বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন থাকার পরামর্শ দিয়ে তাঁদের ছাড়া হয়।
উল্লেখ্য, বাবলু নিজেও মহারাষ্ট্রের পুণেতে কাজ করতেন। তবে দুই মাস আগে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন।
ঘটনায় ৭ অভিযুক্তের মধ্যে সুধীর কুমার ও মুন্না মাহাতো নামে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি ৫ জনের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন রুন্নিসইদপুর থানার অধিকর্তা দেবেন্দ্র প্রসাদ সিং।
Covid-19 এর প্রকোপে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করার পরে কাজ হারিয়ে নিজেদের গ্রামে ফিরে যেতে মরিয়া হয়ে পথে নামেন ভিনরাজ্যে কর্মরত কয়েক লাখ বে-রোজগেরে শ্রমিক। তাঁদের রুখতে রাজ্য সরকারগুলিকে আন্তঃজেলা সীমান্ত বন্ধ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি, ভিনরাজ্যের বিপন্ন শ্রমিকদের আশ্রয় ও খাদ্যের জোগান দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য প্রশাসনকে।
এর জেরে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন থাকার নির্দেশ দেয় বিহার সরকার। অভিযোগ, সেই নির্দেশ অমান্য করছেন অনেকেই। তেমনই দুই পরিবারের কথা হেল্পলাইনে জানানোর জন্য চূড়ান্ত মূল্য দিতে হল বাবলু কুমারকে।