স্টেশনে আচমকা ঢলে পড়ে যেতে দেখা যায় বছর ৪০র ব্যক্তিকে। অনেকেই এগিয়ে আসতে বুঝতে পারেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন ব্যক্তি। ভিড় স্টেশনে তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়। ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ অচৈতন্য অবস্থায় থাকার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হন। আর সুস্থ হয়েই উঠে বলেন, আমাকে পরের হাইস্পিড ট্রেনটা ধরতে হবে, কাজে যেতে হবে। ঘটনা চাংসার। চিনের হুনান প্রভিন্সের চাংসা স্টেশনের এই ঘটনা অবাক করেছে অনেককে।
চলছিল স্প্রিং ফেস্টিভাল হলিডে। এই উৎসব চিনে ৮ দিন ধরে হয়। দিনটি ছিল এই স্প্রিং ফেস্টের শেষ দিন। চাংসা স্টেশনে সেদিন উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টানা ২০ মিনিট অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ব্যক্তি। তখনই তাঁর সুশ্রুষায় এগিয়ে আসেন কয়েকজন রেল স্টাফ, এক চিকিৎসক ও এক হেল্থ সেন্টার। তাঁদের ২০ মিনিটের চেষ্টায় ব্যক্তির জ্ঞান ফেরে। সামান্য সেরে উঠেই তিনি পরের ট্রেন ধরে কাজ করতে যেতে চান। সামান্য সেরে উঠতেই প্রথম কথাটিই তিনি বলেন,'আমাকে কাজে ছুটতে হবে'। তিনি বলতে থাকেন,'পরের হাইস্পিড ট্রেনটা ধরতে হবে, কাজে যেতে হবে।' প্রত্যদক্ষদর্শীরা বলছেন, ওই অসুস্থ ব্যক্তি প্রথমে হাসপাতালেও যেতে চাননি। শেষে চিকিৎসক বিষয়টি তাঁকে বোঝালে তিনি বুঝতে পারেন, আর হাসপাতালে যেতে রাজি হন। চিকিৎসক তাঁকে বলেন, তাঁর সম্পূর্ণ চেক আপের দরকার। আর তার জন্যই তাঁর হাসপাতালে যাওয়া দরকার। প্রথমে খানিকক্ষণ তিনি হাসপাতালে যেতে না চাইলেও, পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাজের চাপ ঘিরে এমন করুণ ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এ।
ঘটনার কথা প্রকাশিত হয় ইন্টারনেটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু নেটিজেনই হতবাক হন ঘটনা ঘিরে। একজন অনলাইন পর্যবেক্ষক মন্তব্য করেছেন, ‘ওহ ডিয়ার, তিনি জেগে উঠলেন এবং প্রথম জিনিসটিই তিনি ভাবলেন অর্থ উপার্জন করার কথা!’আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘তিনি এই সমাজে একা নন। গৃহঋণ থেকে শুরু করে বাচ্চাদের পড়াশোনা পর্যন্ত আমাদের অধিকাংশকেই উচ্চ বোঝা বহন করতে হয়। এটা সবার জন্য সহজ নয়।’ চিনে ক্রমাগত উচ্চ বেকারত্বের হার এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ ঘিরে নানান রিপোর্টের পটভূমিতে এই ঘটনাটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।