তাঁর পদত্যাগ নিয়ে যে আলোচনা ও জল্পনা করা হচ্ছে, তা একেবারেই ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন। নিজেই একথা জানালেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
বুধবার ইম্ফলে তাঁর বাসভবনেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দরবার হলের সেই কার্যক্রমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপরোক্ত তথ্যটি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, সবে মাত্র চারদিনের দিল্লি সফর ছেড়ে মণিপুর ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ২০২৩ সালের ৩ মে, যেদিন থেকে মণিপুরে জাতি সংঘাতের সূচনা হয়েছিল, তারপর থেকে এত দিনের মধ্য়ে এটিই ছিল বীরেনের সবথেকে লম্বা দিল্লি সফর। ফলে এ নিয়ে নানা মহলে জল্পনা শুরু হয়।
পাশাপাশি, কানাঘুষো 'খবর' ছড়াতে শুরু করে, মুখ্যমন্ত্রী পদে নাকি ইস্তফা দিচ্ছেন এন বীরেন সিং। দাবি ছিল, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে হটাতে ইতিমধ্য়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হয়েছেন মণিপুরের ১৯ জন বিধায়ক। তাঁরা নাকি এই মর্মে মোদীকে স্মারকলিপি পর্যন্ত পাঠিয়েছেন!
এই প্রেক্ষাপটে সোশাল মিডিয়ায় একটি 'চিঠির একাংশ' ছড়িয়ে পড়ে। নানা মহলে দাবি করা হয়, ভাইরাল ওই চিঠির অংশটি নাকি মোদীকে পাঠানো মণিপুরের ১৯ জন মন্ত্রীর আবেদনপত্র। যেখানে মণিপুরের নেতৃত্বে তথা মুখ্যমন্ত্রী পদে বদল চাওয়া হয়েছে।
ছয় পৃষ্ঠার সেই তথাকথিত চিঠিতে বিধানসভার অধ্যক্ষ টিএইচ সত্যব্রত এবং দুই মন্ত্রী টিএইচ বিশ্বজিৎ ও ওয়াই খেমচাঁদের স্বাক্ষর রয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
তথাকথিত সেই চিঠির একাংশে লেখা ছিল, 'বর্তমান পরিস্থিতিতে মণিপুরের মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। মূলত তারা প্রশ্ন তুলছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে। কেন এখনও পর্যন্ত শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানো গেল না? কেন এখনও পর্যন্ত আমজনতার দাবি পূরণ করা হল না?'
ওই একই 'চিঠি'তে জানতে চাওয়া হয়, শীঘ্রই যদি সমাধান সূত্র বের করা সম্ভব না হয়, তাহলে কি বিধায়কদের পদত্যাগ করা উচিত? বলা হয়, 'আমরা বিজেপির একনিষ্ঠ সমর্থক হিসাবে, এবং মণিপুরের জনমত লাভের ভিত্তিতে, মনে করি মণিপুর রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। পাশাপাশি, রাজ্য়ে যাতে বিজেপির পতন না হয়, সেটা দেখাও আমাদের কর্তব্য।'
এদিন এই ভাইরাল চিঠির প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে প্রশ্ন করা হয়। যার জবাবে তিনি বলেন, 'আমার ওসব ভাবার কোনও দরকার নেই। গণতন্ত্রে প্রত্য়েক নাগরিকের অধিকার রয়েছে নিজের মতামত প্রকাশ করার। তবে, আমার পদত্যাগ নিয়ে আমি বলতে পারি, ওটা পুরোটাই ভুয়ো রটনা। আমরা যা করছি, মানুষের সমর্থন তাতে রয়েছে।'