বিজেপি শাসিত রাজ্য মণিপুরে বাস ভর্তি জওয়ানদের পুড়িয়ে মারার ছক কষা হল। বাসটি সিআরপিএফ রক্ষীদের নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা হয়। বাসটিকে ঘিরে তাতে আগুন ধরানো হয়। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় আবার নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুরের কাংপোকপি। সিআরপিএফের এই বাস জ্বালিয়ে দিয়েছে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। যদিও এই ঘটনায় কারও প্রাণহানি ঘটেনি। কেউ আহত হননি বলে খবর। কিন্তু এই ঘটনা কারা ঘটাল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে এবার মণিপুর ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার নয়াদিল্লিতে অফিসারদের সঙ্গে এই বৈঠকে হিংসায় যারা মদত দিচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মেইতেই এবং কুকি—দুই সম্প্রদায়ের সঙ্গেই খুব শীঘ্রই বৈঠক করবেন তিনি। আর তার মধ্যেই এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল। জাতিগত সংঘর্ষে রক্তাক্ত মণিপুর। তার মধ্যে মণিপুরের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সে রাজ্যের সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বাসে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে সংঘর্ষ কবলিত কাংপোকপি এলাকায়।
আরও পড়ুন: ‘রেখা সন্দেশখালির বাঘিনী’, বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নয়া সম্বোধন
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে কাংপোকপিতে ঢুকেছিল সিআরপিএফ জওয়ানদের একটি বাস। তখন বাসটিকে আটকে একদল লোক জওয়ানদের বাস থেকে নেমে যেতে বলেন। সিআরপিএফ জওয়ানেরা বাস থেকে নামতেই তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কাংপোকপি কুকি অধ্যুষিত জেলা বলেই পরিচিত। যে বাসে আগুন ধরানো হয়েছে সেটির মালিক মেইতেই সম্প্রদায়ের। বাসটি মেইতেই সম্প্রদায়ের হওয়ায় কুকি অধ্যুষিত এলাকাতে ঢুকতেই হামলা চালানো হয়। বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জওয়ানদের বাসে আগুন ধরানোর খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। পরে অবরোধ সরিয়ে পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের ধারণা, বাসে আগুন ধরিয়ে জওয়ানদের পুড়িয়ে মারা ছক ছিল।
এছাড়া গত সপ্তাহে এই রাজ্যের বিষ্ণুপুরে দু’টি ট্রাক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই বিষ্ণুপুর জেলা আবার মেইতেই অধ্যুষিত। তারই বদলা কুকিরা নিল বলে মনে করা হচ্ছে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে মণিপুর অশান্ত রয়েছে। জাতিগত সংঘর্ষে শতাধিক নিহত হয়েছেন। কদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা টহলদার বাহিনী আক্রান্ত হয়েছে। মণিপুর ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে লোকসভা নির্বাচন মিটতেই বার্তা দিয়েছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। আর যাতে কোনও হিংসার ঘটনা না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতে বলেন শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রয়োজনে মণিপুরে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তারপরই ঘটল এমন ঘটনা।