সদ্য হিংসার আগুনে জ্বলে উঠেছিল মণিপুর। কিছুদিন আগেই সেরাজ্যে ৩০ এর বেশি জঙ্গি নিধনের খবর জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। এরপর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, মণিপুরে হিংসার ঘটনার তদন্ত করতে চলেছে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন প্যানেল। এদিকে সদ্য মণিপুরের পুলিশের কিছু অফিসারের দায়িত্বে রদবদল হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন ঘোষণা করেন, মণিপুরের হিংসার তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করছে সরকার। আর সেই কমিটির প্রধান হতে চলেছেন এক অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এছাড়াও মণিপুরের রাজ্যপাল শান্তি কমিটির প্রধান হিসাবে থাকবেন। রাজ্যপালের অধীন কমিটিতে মণিপুরের সুধী সমাজের প্রতিনিধিরা থাকতে চলেছেন। উল্লেখ্য, সদ্য হিংসা ক্লান্ত মণিপুরের সফরে গিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মণিপুর সরকারের তরফে প্রয়াতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সেই টাকা সরাসরি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। এছাড়াও প্রয়াতদের পরিবারকে কেন্দ্রের তরফে আরও ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকাও ট্রান্সফার করা হবে ব্যাঙ্কে। সাফ জানান শাহ। এদিকে, সদ্য ত্রিপুরা ক্যাডারের রাজীব সিংকে মণিপুরে নিয়ে আসা হয়। এদিকে, মণিপুরের ডিজিপি কুকি সম্প্রদায়ভূক্ত দৌঞ্জেলকে ঘিরে নানান তথ্য উঠছিল। পুলিশের নেতৃত্বে ডিজিপির জায়গায় এডিজিপি আশুতোষ সিনহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অমিত শাহ বলেন, গত এক মাসে মণিপুর জুড়ে একাধিক হিংসার ঘটনা দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, বহু মানুষ স্বজন হারিয়েছেন, বহু মানুষ পরিজনের যন্ত্রণায় কেঁদেছেন। প্রয়াতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেথেন অমিত শাহ। অমিত শাহের তরফে বলেন, ‘আমি গত ৩ দিনে মণিপুরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। ইম্ফল, মোরে, চুরাচন্দপুরে গিয়েছি। সেখানে অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে রাজ্যে শান্তি স্থাপন হয়। মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের সিএসওদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
উল্লেখ্য, জাতিগত দাঙ্গায় গত এক মাস ধরে উত্তাল মণিপুর। এরপরই মণিপুরের সফরে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মেইতেই, কুকি দুই পক্ষের সম্প্রদায়ের সঙ্গেই তিনি কথা বলেন। যাতে দুই পক্ষের সংঘাত স্তব্ধ হয়ে শান্তি স্থাপিক হয়, সেদিকে নদর দেওয়ার বার্তা দেন শাহ। উল্লেখ্য, গত ৩ মে উপজাতি কেন্দ্রীক এর মিছিল থেকে জ্বলে ওঠে মণিপুর। হিংসা ছড়ায় বিভিন্ন এলাকায়। বন্ধ হয়ে যায় নানা পরিষেবা। রাজ্য থেকে ঢুকতে বের হতে পারেন না অনেকে। পৌঁছতে দেরি হয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। ফলে জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ে। ময়দানে নামে সেনা। সেনার প্রহরায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সেরাজ্যে প্রবেশ করে। এরপর ধীরে ধীরে সেখানে শান্তি স্থাপিত হয়।