উৎপল পরাশর
মণিপুরের মুখ্য়মন্ত্রী এন বীরেন সিং জানিয়েছেন, কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে উত্তরপূর্ব ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে কোনও আপোশ নয়। আসলে কুকি উপজাতির ১০জন মণিপুরের বিধায়ক শুক্রবার একটা যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা পৃথক প্রশাসন চেয়েছেন। মূলত যেখানে কুকি, হমার ও জোমি সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি বাস করেন সেখানকার জন্য়ই তাঁদের এই দাবি। এদিকে সেই বিধায়কদের মধ্য়ে সাতজন আবার শাসকদল বিজেপির।
ইম্ফলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গতকাল আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা সবিস্তারে তাঁকে বলেছি। তিনি সামগ্রিক ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্র চাইছে যাতে রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন , অমিত শাহ নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মণিপুরের অখণ্ডতা ও ঐক্যবদ্ধতা কোনও মূল্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না।
তিনি জানিয়েছেন, মণিপুরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে দিল্লিতে মিটিং করেছেন অমিত শাহ। রাজ্য়ে যাতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করে সেকারণে তিনি বার্তাবাহকদের পাঠিয়েছেন যাতে তাঁরা ওই সম্প্রদায়গুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনা ও মণিপুর পুলিশের টিম জঙ্গি গোষ্ঠী ক্যাম্পগুলি ঘুরে দেখেছেন। দেখা গিয়েছে সেখানে অস্ত্র রয়েছে। দেখা যাচ্ছে ওই অস্ত্রগুলি বেআইনীভাবে মায়ানমার থেকে আনা হয়েছিল।
মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, অমিত শাহ জানিয়েছেন যারা বেআইনী অস্ত্র ব্যবহার করে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা এই হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের পাশে থাকার জন্য় কী করতে হবে সেই সংক্রান্ত একটা বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কেন্দ্র। শান্তি বিঘ্ন হতে পারে এমন মিছিল বা কর্মসূচি গ্রহণ না করার ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে। কোথাও কোনও গুজবে বা প্ররোচনায় পা না দেওয়ার ব্যাপারেও আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে রবিবার মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, হিংসায় নিহত ৭৩জনের দেহ পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে হিংসায় ২৪৩জন আহত হয়েছেন।
এদিকে ভারতীয় সেনা সোমবার জানিয়েছে, ইম্ফলের বাইরে বসবাসকারী মানুষদের ভয় দূর করার জন্য় মণিপুর সরকারের সঙ্গে সমণ্বয় রেখে কাজ করবে সেনা। সেনার তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মণিপুরের কষ্টার্জিত শান্তি বজায় রাখার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনা, অসম রাইফেলসের বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছে। ইন্দো মায়ানমার সীমান্তের প্রতিও নজর রাখা হচ্ছে যাতে কোনও জঙ্গি হানা না হয়।