দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর গতরাতে যখন সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে এসে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। সিসোদিয়া বলেন, ‘আমাকে আপ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। বলা হয়, বিজেপিকে আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করবে। এখন বুঝতে পারছি, সিবিআই কোনও দুর্নীতির তদন্ত করছে না। অপারেশন লোটাস সফল করার চেষ্টা করছে। আমি তাঁদের বলি, আমার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে নেই। যখন দেখি এক জন রিকশাওয়ালার ছেলে আইআইটিতে ভর্তি হচ্ছে তখনই আমি সন্তুষ্ট হই।’
এদিকে সিসোদিয়ার এহেন অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘সিবিআই দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগগুলি খণ্ডন করে এবং বলতে চায় যে সিসোদিয়াকে এফআইআর-এর ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে আইনি পদ্ধতিতেই জেরা করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত আইন অনুযায়ী চলবে।’ এদিকে সিবিআই সূত্রের দাবি, মণীশের জবাবে তারা আদৌ সন্তুষ্ট নয়। দ্রুত তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, দিল্লির আবগারি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে। এই আবহে কয়েকদিন আগেই ১৪ ঘণ্টা ধরে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। সেই সময় কম্পিউটার, ফোন এবং বিভিন্ন সরকারি ফাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সিসোদিয়ার পাশাপাশি দিল্লির তৎকালীন আবগারি কমিশনার আরভ গোপী কৃষ্ণের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। উল্লেখ্য, আবগারি দপ্তর সিসোদিয়ার অধীনে।
এর আগে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন। মুখ্য সচিবের প্রতিবেদনের পর তিনি এই সুপারিশ করেন। রিপোর্টে উপমুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই আবহে সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। জানা গিয়েছে, মণীশ সিসোদিয়ার নামে এফআইআর করার আগে রাষ্ট্রপতির থেকে অনুমতি নেয় সিবিআই। এরপর থেকেই এই মামলায় রাজৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সিসোদিয়া অভিযোগ করেন, বিজেপি তাঁকে আম আদমি পার্টি ভাঙার প্রস্তাব দিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি বিধানসভায় আস্থা ভোটও করান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিকে বিজেপিও কেলেঙ্কারি নিয়ে পালটা তোপ দেগেছে আম আদমি পার্টিকে।